তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে, তখন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না: হুইপ স্বপন
- প্রকাশিত সময় ০৫:২৩:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২২
- / 149
শনিবার দুপুরে নোয়াখালীর সেনবাগ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতা দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। ছবি: স্বতঃকণ্ঠ
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বিএনপির নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বড় বড় কথা বলেন। মির্জা ফখরুল সারাদিন নেত্রীকে (শেখ হাসিনাকে) গালাগাল করেন।
তিনি বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে বলেন,তারা কত বড় ভয়ংকর। তারা ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই আওয়ামী লীগ কে হুমকি দিচ্ছে আওয়ামী লীগের সব নেতারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবে। কেন পালিয়ে যাবে? কারণ তারা (বিএনপি নেতারা) আমাদের মারবে,আমাদেরকে হত্যা করবে। আমাদের গলা কেটে নেবে,হাত কেটে নেবে,পা কেটে নেব আমাদের কন্যা ধর্ষণ করবে,আমাদের স্ত্রী ধর্ষণ করবে। এ কারণে বলছে আওয়ামী লীগ পালিয়ে যাবে। বিএনপি একটি বড় প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনৈতিক দল।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে নোয়াখালীর সেনবাগ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
হুইপ স্বপন বলেন, আমরা ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় আছি। আমাদের ক্ষমতার আমলে বিএনপির একটি নেতাকে ও দেশ থেকে পালাতে হয় নাই। একটা মানুষকেও আমরা দেশ থেকে বের করে দেয় নাই। একটা মানুষকে ও আমরা পালানো জন্য হুমকি দেয় নাই।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানে প্রসঙ্গ টেনে বলেন, তাদের নেতা তারেক রহমান লেজ গুটিয়ে পালিয়ে গেছে তখন ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তখন মমতাময়ী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না। তখন মমতাময়ী শেথ হাসিনা যদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকতেন তাহলে তারেক রহমান কে দেশ ছেড়ে পালিয়ে বিট্রেনে আশ্রয় নিতে হতো না। এই বাস্তবতা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যে ফখরুল সারাদিন বঙ্গবন্ধু কন্যাকে গালাগাল করে হুমকি দেয় আমরা পালিয়ে যাব। আরে বেটা এ মাটির গভীরে আওয়ামী লীগের শিকড় পোতা, এ দেশের জনগণের মধ্যে আওয়ামী লীগের জন্ম,কৃষকের লাঙ্গল পলা থেকে আওয়ামী লীগের জন্ম,কৃষকরে কাস্তে থেকে আওয়ামী লীগের জন্ম,শ্রমিকের ঘাম,হাতুড়ি থেকে আওয়ামী লীগের জন্ম। কোন জেনারেলের পকেট থেকে আওয়ামী লীগ অবৈধ ভাবে জন্ম গ্রহণ করে নাই। এই আওয়ামী লীগ দেশ ছেড়ে পালাবে এ কল্পনা তোরা কিভাবে করতে পারিস। আমরা দেশ ছেড়ে পালাবো না। তোমাদেরকে ও দেশে থাকার অনুরোধ করি। তোমাদেরকে ও দেশ ছেড়ে পালাতে বলবনা। দরকার হলে তোমাদের কে পাহারা দিয়ে তোমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যার মহত্ত্ব কোন জায়গায়। বিএনপি সংলাপে আসলো। মির্জা ফখরুল সাহেব আসলেন। নেত্রী জিজ্ঞেস করলেন ফখরুল শুনেছি তোমার শরীরটা খারাপ। ঠিক মতো ডাক্তার দেখাও, ওষুধ খাও। তোমার শরীর টা কেমন জানি হয়ে গেছে। একটু নিজের যত্ন নিও। এই যে মা, বড় বোন এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় কেউ আছে। সেই মানুষটার পিছনে থাকা একটা মহৎ কাজ নয়। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সকল কিছুর কেন্দ্রবিন্দু শেখ হাসিনা।
হুইপ স্বপন দলীয় নেতাকর্মিদের উদ্দেশ করে বলেন, মাত্র এক বছর সময় আছে নির্বাচনের। আমরা একটি বিপদে পড়েছি,আমরা একটা সমস্যায় পড়েছি। হঠাৎ করে করোনা এসে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি তছনছ করে দিয়েছে। হঠাৎ করে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ। সেকশন এবং পাল্টা সেকশন গোটা বিশ্বের অর্থনীতিকে টালমাটাল করে তুলেছে। আমরাও বিশ্বের থেকে বিচ্ছন্ন কোন অংশ নয়,আমরা বিশ্বের অংশীদার। আজকে জিনিস পত্রের দাম বেড়েছে,আজকে কিছু সমস্যা হচ্ছে। এ সমস্যা ঢেকে রাখার বিষয় নয়। এ সমস্যা যা হচ্ছে স্বীকার করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা ইউরোপ যে জায়গায় ছিল আমরা এ জায়গায় ছিলাম। ইউরোপে জীবন মান নেমে গেছে অনেক নিচে। আমাদের জীবন মান ততোটা নামে নাই। যে রকম জীবনমান ছিল বিএনপির আমলে তার থেকে এখনো আমরা অনেক উপরে আছি। এখনো ভালো আছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা মানুষের জীবন মানকে অনেক উপরে তুলে ছিলেন। সেখান থেকে আজকের দিনে কিছু সমস্যা হচ্ছে। মানুষের মধ্যে কষ্ট হচ্ছে। আমরা যদি বাস্তব কথা গুলো মানুষের দুয়ারে গিয়ে বিনয়ের সঙ্গে বলি মানুষ একটু দুঃখ ভুলবে। মানুষ জানে, বিশ্বাস করে,ইভেন যারা বিএনপি-জামায়াত করে তারাও বিশ্বাস করে জননেত্রী শেখ হাসিনার চেয়ে ভালো কেউ দেশ চালাতে পারবেনা। সব মানুষ বিশ্বাস করে শেখ হাসিনার চেয়ে ভালো কেউ দেশ চালাতে পারবেনা। তিনি আছেন বলে বাংলাদেশ এখনো নিচে নেমে যায় নাই।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ এ.এইচ.এম খায়রুল আনম সেলিম। এতে সভাপতিত্ব করেন সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আলহাজ্ব মোরশেদ আলম এমপি। সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক ও শওকত হোসেন কাননের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন,আওয়ামী লীগের কৃৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, যুগ্ম-আহ্বায়ক শিহাব উদ্দিন শাহীন,শহীদুল্লাহ খাঁন সোহেল, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী মো.জাহাঙ্গীর আলম, সেনবাগ উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আহম্মদ চৌধুরী, সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো.বাহার উল্ল্যা বাহার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো.গোলাম কবির, সেনবাগ পৌরসভার মেয়র আবু নাছের দুলাল, ৭নং মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো.ফিরোজ আলম রিগান প্রমূখ।
উল্লেখ্য, সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হবে জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।