ঢাকা ১০:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

খেলাও দেখবো, দেশও চিনবো

মোশাররফ হোসেন মুসা
  • প্রকাশিত সময় ১১:২২:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২২
  • / 206

মোশাররফ হোসেন মুসা


সকল খেলাতেই বিনোদন আছে। তবে ফুটবল খেলাতে বেশি বিনোদন পাওয়া যায় । কারণ খেলাটির নিয়ম কানুন সহজ হওয়ায় সকলের বোধগম্য।  তাছাড়া  মাত্র ৯০ মিনিটে খেলাটি শেষ হয়। এ খেলাতে বিভিন্ন ক্রীড়া নৈপুণ্য দেখানোর সুযোগ রয়েছে।  

প্রতি চার বছর পর পর ফিফা( ফেডারেশন ইন্টারন্যাশনাল দি ফুটবল এসোসিয়েশন) এ খেলা আয়োজন করে। এবার কাতারে ২২ তম বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন করা হয়েছে। পুরো বিশ্ব ফুটবল খেলায় মেতেছে। আমাদের দেশও এর বাইরে নেই। কেউ ব্রাজিল, কেউ আর্জেন্টিনা, কেউ জাপান, কেউ জার্মানী সমর্থক হয়ে খেলা উপভোগ করছে। কোনো কোনো সমর্থক আবেগে পছন্দনীয় দেশের ৩/৪ কি. মি. পতাকা বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। কেউ পুরো বাড়ি ব্রাজিলের পতাকার রঙে সাজিয়েছে। এক রিক্সাওয়ালা তার রিক্সা আর্জেন্টিনার পতাকার আকারে রঙ করেছে। খেলা নিয়ে ইতোমধ্যে কোথাও কোথাও সমথকদের মধ্যে মারামারি ঘটেছে।  কিন্তু অনেকেই ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, ফ্রান্স কোন মহাদেশে অবস্থিত, সেসব দেশের রাজধানীর নাম কি এসব বিষয়ে কোনো ধারণা রাখেন না। কেউ কেউ সার্বিয়াকে সাইবেরিয়া এবং কেউ কেউ জাপান ও জার্মানিকে এক দেশ মনে করে গুলিয়ে ফেলছে। সেজন্য সকলের উচিত খেলাও দেখবো, দেশও চিনবো- এই মানসিকতা ধারণ করা। কারন দেশ চেনার মাধ্যমে পৃথীবীর ইতিহাস,মানুষের বিবতন, ভাষার বিবতন,নৃতাত্বিক বৈশিষ্ট্য সহ বহু কিছু জানা সম্ভব।  

পৃথিবীতে মোট মহাদেশ সাতটি, যথা-এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকার, দক্ষিণ আমেরিকা, ওশেনিয়া ও এ্যান্টার্কটিকা। এদের মধ্যে ৬টি মহাদেশের মোট ৩২ টি দেশ খেলায় অংশগ্রহণ করেছে। এ্যান্টার্কটিকা জনশুন্য ও বরফাচ্ছাদিত মহাদেশ হওয়ায় এই মহাদেশ খেলার তালিকায় নেই। ফিফা এবার এশিয়া মহাদেশের কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা আয়োজন করেছে। কাতার স্বাগতিক দেশ হওয়ায় খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। কাতার একটি ছোট দেশ। এর রাজধানীর নাম দোহা। জনসংখ্যা ২৮ লক্ষ ৫২ হাজার। আয়তন ১১ হাজার ৪৩৭ বর্গ কি.মি.।  এদেশে রাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বিদ্যমান। আল-জাজিরা নামক টিভির কারণে দেশটি পরিচিতি লাভ করে। সৌদি আরব এশিয়া মহাদেশের একটি দেশ। সৌদি আরবীয় রাজতন্ত্র হচ্ছে আরবের বৃহত্তম দেশ। এ দেশটির ১% জমি আবাদযোগ্য।  আব্দুল আজিজ ইবনে সৌদ ১৯৩২ সালে ৫টি রাজ্য দখল করে সৌদি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এর রাজধানীর নাম রিয়াদ। আয়তন ২২ লক্ষ ৪০৪ বর্গ কি. মি ( আনুমানিক)। জনসংখ্যা প্রায় ৪ কোটি। দেশটি ১৯৫৬ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে। ১৯৫৭ সালে আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। দেশটিতে বিশাল তেল ভান্ডার রয়েছে। মুসলমানদের পবিত্রস্থান কাবাঘরের জন্য দেশটি  বিশ্বে পরিচিত। ইরান এশিয়া মহাদেশের একটি দেশ। এর জনসংখ্যা প্রায় ৮ কোটি ১০ লক্ষ। আয়তন ১৬ লক্ষ ৪৮ হাজার বর্গ কি. মি.। রাজধানির নাম তেহরান। ইরান শিয়া সম্প্রদায় প্রধান দেশ। ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে দেশটি শিয়াপন্থীরা দখল করে নেয়। শাসন ব্যবস্থা শরিয়া ভিত্তিক। ইরান ১৯৪৮ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে এবং ৬ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। জাপান এশিয়া মহাদেশের শেষপ্রান্তে অবস্থিত। একে সুর্যোদয়ের দেশ বলা হয়। এর রাজধানীর নাম টোকিও।  জনসংখ্যা ১২ কোটি ৬০ লক্ষ ও আয়তন ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ৯৭২ বর্গ কি. মি। দেশটি শৃঙ্খলা, পরিচ্ছন্নতা আর কঠোর পরিশ্রমের কারণে সুপরিচিত। দেশটি দ্বীপরাস্ট্র হওয়ার বহিঃশক্তি কখনো দখলে নিতে পারেনি। ফলে নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য বজায় রাখতে পেরেছে এবং নিজেদের মতো গড়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে।  দেশটি ১৯২১ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং এ পর্যন্ত ৭ বার বিশ্বকাপ খেলায় অংশগ্রহণ করে। দক্ষিণ কোরিয়া এশিয়া মহাদেশের পুর্বদিকে অবস্থিত। পুর্বে কোরিয়া নামে এক রাষ্ট্র ছিল এবং ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জাপানের অধীনে ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া নামে দুটি দেশের জন্ম ঘটে। এর রাজধানীর নাম সিউল ও জনসংখ্যা প্রায় ৫ কোটি ১৪ লক্ষ। আয়তন ৯৮ হাজার ৯১৩ বর্গ কি.মি। দেশটি ১৯৪৮ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং এ পর্যন্ত ১১ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। ইকুয়েডর দক্ষিণ আমেরিকার একটি দেশ। রাজধানীর নাম কিতো, জনসংখ্যা ১ কোটি ৭৭ লক্ষ ও আয়তন ২ লক্ষ ৮৩ হাজার ৯১৩ বর্গ কি. মি। দেশটি ১৯২৬ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং ৪ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। আর্জেন্টিনা দক্ষিণ আমেরিকার একটি দেশ। রাজধানীর নাম বয়েনোস আইরেস। আর্জেন্টিনার জনসংখ্যা প্রায় ৪ কোটি, আয়তন ২৭ লক্ষ ৮০ হাজার ৪ শ বর্গ কি. মি। আর্জেন্টিনা শব্দের অর্থ রৌপ্য। এটি স্পেনের উপনিবেশ থাকায় এর ভাষা স্পেনিশ। নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যও স্পেনীয়। প্রখ্যাত বামপন্থী গেরিলা যোদ্ধা চেগুয়েভারার জন্মস্থান এদেশে। চিলি, প্যারাগুয়ে, ব্রাজিল ও উরুগুয়ে এর পাশ্ববর্তী দেশ। দেশটি দুবার বিশ্বকাপ জয়লাভ করে( ১৯৭৮ ও ১৯৮৬) এবং এ পর্যন্ত ১৮ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। ব্রাজিল দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের একটি দেশ। রাজধানীর নাম ব্রাসিলিয়া ও জনসংখ্যা প্রায় ২০ কোটি, আয়তন ৮৫ লক্ষ ১৪ হাজার ৮৪৭ বর্গ কি. মি। সম্প্রতি বামপন্থী নেতা লুলা দা সিলভা সেদেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।  ব্রাজিল শব্দের অর্থ জলন্ত কয়লা। ১৬ শতকে পুর্তগিজরা দেশটি দখলে নেয়। সেজন্য এর রাস্ট্রীয় ভাষা পুর্তগীজ এবং নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য মিশ্র। ব্রাজিল এ পর্যন্ত ৫ বার বিশ্বকাপ জিতেছে( ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০, ১৯৯৪ এবং ২০০২)। সেদেশে কথিত আছে দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার চেয়েও  জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া কঠিন। উরুগুয়ে দক্ষিণ আমেরিকার একটি দেশ। রাজধানীর নাম মল্টিভিডিও, জনসংখ্যা ৫০ লক্ষ, আয়তন ১ লক্ষ ৭৬ হাজার ২১৫ বর্গ কি.মি। সরকারি ভাষা স্পেনিশ। দেশটি ১৯২৩ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং ২ বার বিশ্বকাপ জিতে( ১৯৩০ ও ১৯৫০)। সেনেগাল আফ্রিকা মহাদেশের একটি দেশ। রাজধানীর নাম ডাকার, জনসভা প্রায় ১৬ কোটি, আয়তন ১ লক্ষ ৯৬ হাজার ৭১২ বর্গ কি.মি। সেনেগাল নদী থেকে দেশের নামটি এসেছে। দেশটি ১৯৬৪ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং ৩ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়।তিউনেশিয়া আফ্রিকা মহাদেশের একটি দেশ। তিউনেশিয়া শব্দের অর্থ রাত কাটাবার স্থান। রাজধানীর নাম তিউনিশ, জনসংখ্যা প্রায় ১১ কোটি, আয়তন ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৬১০ বর্গ কি.মি। দেশটি ১৯৬০ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং ৬ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। মরক্কো আফ্রিকা মহাদেশের একটি দেশ। রাজধানী রাজধানীর নাম রাবাত, জনসংখ্যা ৩ কোটি ৪০ লক্ষ, আয়তন ৭ লক্ষ ১০ হাজার ৮৫০ বর্গ কি.মি। দেশটি ১৯৬০ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং এ পর্যন্ত ৬ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। ক্যামেরুন আফ্রিকা মহাদেশের একটি দেশ। রাজধানীর নাম আউন্ডে, জনসংখ্যা ১ কোটি ৭০ লক্ষ, আয়তন ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার ৪৪২ বর্গ কি.মি। এদেশে ১৯৫৯ সালে ফুটবল সংস্থা গঠিত হয় এবং ১৯৬২ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে। দেশটি ৮ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। ঘানা আফ্রিকা মহাদেশের একটি দেশ। রাজধানীর নাম আক্রা, জনসংখ্যা ২ কোটি ৮০ লাখ, আয়তন ২ লক্ষ ৩৮ হাজার ৫৩৫ কি. মি।  সরকারি ভাষা ইংরেজি। ফিফার সদস্য লাভ করে ১৯৬২ সালে। দেশটি ৫ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়।

যুক্তরাষ্ট্র উত্তর আমেরিকার একটি দেশ। দেশটির সাম্রাজ্য বাদী শক্তি ও পুজিবাদী নীতির কারণে সারাবিশ্বে আলাদা পরিচিতি রয়েছে। ইংরেজিতে ইউএসএ তথা- ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকা বলা হয়। ৫৪টি স্বাধীন রাষ্ট্র (রাজ্য নয়) মিলে যুক্তরাষ্ট্র গঠিত হয়েছে। এর রাজধানীর নাম ওয়াশিংটন ডি.সি.। মোট জনসংখ্যা ৩৩ কোটি ১৪ লক্ষ, আয়তন ৯৮ লক্ষ ৩৩ হাজার ৫১৬ বর্গ কি.মি.। ১৯১৪ সালে ফিফার সদস্য পদ লাভ করে এবং ১৯১৬ সালে আন্তর্জাতিক খেলায় অংশ গ্রহণ করে। মেক্সিকো উত্তর আমেরিকার মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। এর আয়তন ২০ লক্ষ বর্গ কি.মি.। আয়তনে পৃথিবীর ৫ম বৃহত্তম রাষ্ট্র। জনসংখ্যা প্রায় ১১ কোটি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর সীমান্তবর্তী রাষ্ট্র। এদেশের জাতীয় ফুটবল দল ১৯২১ সালে ফিফার সদস্য পদ লাভ করে এবং ১৯২৩ সালে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ফুটবলের প্রতিনিধিত্ব করে। ১৯৮৬ সালে মেক্সিকোতে ১৩ তম বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মেক্সিকো এ পর্যন্ত ১৬ বার বিশ্বকাপে অংশ গ্রহণ করে। কোস্টারিকা দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। নিকারাওয়া, পানামা সীমান্তবর্তী রাষ্ট্র। রাজাধানী স্যানহোসে। জনসংখ্যা প্রায় ৫০ লক্ষ, ও আয়তন ৫১ হাজার ১০০ বর্গ কি.মি.। ১৯২৭ সালে জাতীয় টিম ফিফার সদস্য পদ লাভ করে এবং ১৯২১ সালে আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করে।    

ক্যানাডা উত্তর আমেরিকা মহাদেশের একটি দেশ। আয়তনে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। রাজধানীর নাম অটোয়া। আয়তন ৯৯ লক্ষ ৮৫ হাজার বর্গ কি.মি.। জনসংখ্যা ৩ কোটি ৮৫ লক্ষ দেশটির- শাসন ব্যবস্থা গনতান্ত্রিক এবং বৃটেনের রাজা/রানীকে রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে মান্য করে। এদেশের ফুটবল টিম ১৯১২ সালে ফিফার সদস্য পদ লাভ করে। ১৮৮৫ সালে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহন করে। ক্যানাডা মোট ২ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। নেদারল্যান্ডস ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। দেশটি হল্যান্ড, ডাচ ও ওলন্দাজ নামেও পরিচিত। রাজধানীর নাম অ্যামস্টারডাম,  তিনটি দ্ধীপ নিয়ে এ রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে। জনসংখ্যা ১ কোটি ৬৭ লক্ষ। আয়তন ৪২ হাজার ৬৭৯ বর্গ কি.মি.। এদেশের জাতীয় ফুটবল দল ১৯০৪ সালে ফিফার সদস্য হয়। নেদারল্যান্ড এ পর্যন্ত ১১ বার বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায়। ইংল্যান্ড বা যুক্তরাজ্য ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। এ রাষ্ট্রটি ব্রিটেন নামেও পরিচিত।  পৃথিবীর অর্ধেক রাষ্ট্র এক সময় বৃটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। এর রাজধানীর নাম লন্ডন। জনসংখ্যা ৫ কোটি ৪৩ লক্ষ। বর্তমান আয়তন ১ লক্ষ ৩০ হাজার ২৭১ বর্গ কি.মি.। ইংল্যান্ডের জাতীয় দল ১৯০৫ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে। ইংল্যান্ড এ পর্যন্ত ১১ বার বিশ্বকাপে অংশগ্রহনের সুযোগ পায়।

ওয়েলস দেশটি ইংল্যান্ডের একটি খন্ডিত অংশ নিয়ে গঠিত। রাজধানী কার্ডিফ। জনসংখ্যা ৩১ লক্ষ এবং আয়তন ২০ হাজার ৭৭৯ বর্গ কি.মি.। এদেশের টিম ১৯১০ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে। ওয়েলস এ পর্যন্ত ২ বার বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায়। পোল্যান্ড মধ্য ইউরোপের একটি দেশ। এর রাজধানীর নাম ওয়ারশ। জার্নালী, চেক প্রজাতন্ত্র, ইউক্রেন ও বেলারুশ এর পার্শ্ববর্তী দেশ। এর জনসংখ্যা ৩ কোটি ৮৬ লক্ষ ও আয়তন ৩ লক্ষ ১২ হাজার ৬৭৯ বর্গ কি.মি.। দেশটি ১৯২৩ সালে ফিফার সদস্য পদ লাভ করে এবং এ পর্যন্ত ৯ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। ফ্রান্স ইউরোপ মহাদেশের একটি শক্তিশালী দেশ। এর রাজধানীর নাম প্যারিস। জনসংখ্যা ৬ কোটি ৭১ লক্ষ ও আয়তন ৬ লক্ষ ৪৩ হাজার ৮০১ বর্গ কি.মি.। ফরাসী ফুটবল দল ১৯১৯ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে এবং ১৯০৪ সালে আন্তর্জাতিক খেলার সুযোগ পায়। ফ্রান্স এ পর্যন্ত ২ বার বিশ্বকাপ জিতেছে। ডেনমার্ক ইউরোপ মহাদেশের একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র। রাজধানী কোপেনহেগেন। জনসংখ্যা ৫৪ লক্ষ ৫২ হাজার ও আয়তন ৪৩ হাজার ০৯৪ বর্গ কি.মি.। এদেশের জাতীয় টিম ১৯০৪ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং ১৯০৮ সালে আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করে। দেশটি এ পর্যন্ত ৬ বার বিশ্বকাপ খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। স্পেন ইউরোপ মহাদেশের একটি দেশ। দেশটি এক সময় ল্যাটিন আমেরিকায় সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিল। সে কারনে দক্ষিণ আমেরিকার বহু দেশের সরকারী ভাষা স্পেনিশ এবং নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য স্পেন অধিবাসীদের মতো। এর রাজধানীর নাম মাদ্রিদ। জনসংখ্যা ৪ লক্ষ ৬৩ হাজার ৩২১ জন এবং আয়তন ৫ লক্ষ ৫ হাজার বর্গ কি.মি.। এদেশের জাতীয় টিম ১৯০৪ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে এবং ১৯২০ সালে প্রথম বারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করে। দেশটি এ পর্যন্ত ১ বার বিশ্বকাপ জয়ী হয়।

জার্মানী ইউরোপের একটি শিল্পোন্নত দেশ। দেশটির কারণে ১ম বিশ্বযুদ্ধ ও ২য় বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়। রাজধানীর নাম বার্লিন। জনসংখ্যা ৮ কোটি ২৮ লক্ষ, আয়তন ৩ লক্ষ ৫৭ হাজার ৩৮৬ বর্গ কি.মি.। ফিফার ইতিহাসে জার্মানী একটি সফল দল।দলটি এপযন্ত ৪ বার (১৯৫৪,১৯৭৪,১৯৯০ও ২০০৪) বিশ্বকাপ জয়ী হয়। বেলজিয়াম ইউরোপ মহাদেশের একটি দেশ। রাজধানীর নাম ব্রাসেলম। জনসংখ্যা ১ কোটি ৪২ লক্ষ, আয়তন ৬১ হাজার ২১৫ বর্গ কি.মি.। এদেশের ফুটবল দল ১৯০৪ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে এবং এ পর্যন্ত ১৪ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। ক্রোয়েশিয়া ইউরোপ মহাদেশের একটি দেশ। রাজধানীর নাম জাগ্রেব। জনসংখ্যা ৪৬ লক্ষ, আয়তন ৫৬ হাজার ৫৯৪ বর্গ কি.মি.। দেশটি পূর্বে যুগোশ্লাভিয়ার অংশ ছিল। এদেশের ফুটবল টিম ১৯১২ সালে ফিফার সদস্য পায় এবং ক্রোয়েশিয়া এ পর্যন্ত ৬ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। সার্বিয়া ইউরোপ মহাদেশের একটি দেশ। পূর্বে যুগোশ্লাভিয়ার অংশ ছিল। ১৯৯২ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। এর রাজধানীর নাম বেলগ্রেড। জনসংখ্যা প্রায় ৬১ লক্ষ, আয়তন ৮৮ হাজার ৩৬১ বর্গ কি.মি.। ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেলার সুযোগ পায় এবং এ পর্যন্ত ১২ বার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে।সুইজারল্যান্ড ইউরোপ মহাদেশে অবস্থিত। এটি একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। এর রাজধানীর নাম বের্ণ। জনসংখ্যা ৭৫ লক্ষ, আয়তন ৪১ হাজার ২৮৫ বর্গ কি.মি.। ১৯০৪ সালে ফিফার সদস্য পদ লাভ করে এবং একই বছরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেলার সুযোগ পায়। সুইজারল্যান্ড এ পর্যন্ত ১২ বার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে।

পুর্তগাল ইউরোপের একটি দেশ। নৌবিদ্যায় পারদর্শিতার কারণে এক সময় পৃথিবী ব্যাপী পুর্তগীজদের ব্যবসা ছিল। ল্যাটিন আমেরিকায় এরা সাম্রাজ্য বিস্তার করে। ব্রাজিল এক সময় এদেশের অধিনস্ত ছিল। ফলে ব্রাজিলের সরকারি ভাষা পুর্তগীজ। এর রাজধানীর নাম লিসবন। জনসংখ্যা ১ কোটি ৬৪ লক্ষ এবং আয়তন ৯২ হাজার ৩৫৫ বর্গ কি.মি.। দেশটি ১৯২৩ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং ১৯২১ সালে আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করে। পুর্তগাল এ পর্যন্ত ৮ বার বিশ্বকাপ খেলার অংশগ্রহনের সুযোগ পায়। অস্ট্রেলিয়া ওশেনিয়া মহাদেশের একটি দেশ। অস্ট্রেলিয়া ছাড়া ওশেনিয়া মহাদেশের আর কোন দেশ বিশ্বকাপ খেলায় সুযোগ পায়নি। এর রাজধানীর নাম ক্যানবেরা। জনসংখ্যা ২ কোটি ৫৯ লক্ষ ২৫ হাজার ৬০০ এবং আয়তন ৭৬  লক্ষ ৯২ হাজার ০২৪ বগ কি.মি.। এদেশের জাতীয় দল ১৯৬৩ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং  ১৯২২ সালে আন্তজাতিক খেলায় অংশগ্রহনের সুযোগ পায়। এদলটি এপযন্ত ৬ বার বিশ্বকাপ খেলায় অংশগ্রহন করে।  (সূত্রঃ ইউকিপিডিয়া ও বিভিন্ন পত্রিকা)


লেখক: গণতন্ত্রায়ন ও গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকার বিষয়ক গবেষক এবং সদস্য, সিডিএলজি।
ই-মেইল: musha.pcdc@gmail.com

এই রকম আরও টপিক

খেলাও দেখবো, দেশও চিনবো

প্রকাশিত সময় ১১:২২:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২২

সকল খেলাতেই বিনোদন আছে। তবে ফুটবল খেলাতে বেশি বিনোদন পাওয়া যায় । কারণ খেলাটির নিয়ম কানুন সহজ হওয়ায় সকলের বোধগম্য।  তাছাড়া  মাত্র ৯০ মিনিটে খেলাটি শেষ হয়। এ খেলাতে বিভিন্ন ক্রীড়া নৈপুণ্য দেখানোর সুযোগ রয়েছে।  

প্রতি চার বছর পর পর ফিফা( ফেডারেশন ইন্টারন্যাশনাল দি ফুটবল এসোসিয়েশন) এ খেলা আয়োজন করে। এবার কাতারে ২২ তম বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন করা হয়েছে। পুরো বিশ্ব ফুটবল খেলায় মেতেছে। আমাদের দেশও এর বাইরে নেই। কেউ ব্রাজিল, কেউ আর্জেন্টিনা, কেউ জাপান, কেউ জার্মানী সমর্থক হয়ে খেলা উপভোগ করছে। কোনো কোনো সমর্থক আবেগে পছন্দনীয় দেশের ৩/৪ কি. মি. পতাকা বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। কেউ পুরো বাড়ি ব্রাজিলের পতাকার রঙে সাজিয়েছে। এক রিক্সাওয়ালা তার রিক্সা আর্জেন্টিনার পতাকার আকারে রঙ করেছে। খেলা নিয়ে ইতোমধ্যে কোথাও কোথাও সমথকদের মধ্যে মারামারি ঘটেছে।  কিন্তু অনেকেই ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, ফ্রান্স কোন মহাদেশে অবস্থিত, সেসব দেশের রাজধানীর নাম কি এসব বিষয়ে কোনো ধারণা রাখেন না। কেউ কেউ সার্বিয়াকে সাইবেরিয়া এবং কেউ কেউ জাপান ও জার্মানিকে এক দেশ মনে করে গুলিয়ে ফেলছে। সেজন্য সকলের উচিত খেলাও দেখবো, দেশও চিনবো- এই মানসিকতা ধারণ করা। কারন দেশ চেনার মাধ্যমে পৃথীবীর ইতিহাস,মানুষের বিবতন, ভাষার বিবতন,নৃতাত্বিক বৈশিষ্ট্য সহ বহু কিছু জানা সম্ভব।  

পৃথিবীতে মোট মহাদেশ সাতটি, যথা-এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকার, দক্ষিণ আমেরিকা, ওশেনিয়া ও এ্যান্টার্কটিকা। এদের মধ্যে ৬টি মহাদেশের মোট ৩২ টি দেশ খেলায় অংশগ্রহণ করেছে। এ্যান্টার্কটিকা জনশুন্য ও বরফাচ্ছাদিত মহাদেশ হওয়ায় এই মহাদেশ খেলার তালিকায় নেই। ফিফা এবার এশিয়া মহাদেশের কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা আয়োজন করেছে। কাতার স্বাগতিক দেশ হওয়ায় খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। কাতার একটি ছোট দেশ। এর রাজধানীর নাম দোহা। জনসংখ্যা ২৮ লক্ষ ৫২ হাজার। আয়তন ১১ হাজার ৪৩৭ বর্গ কি.মি.।  এদেশে রাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বিদ্যমান। আল-জাজিরা নামক টিভির কারণে দেশটি পরিচিতি লাভ করে। সৌদি আরব এশিয়া মহাদেশের একটি দেশ। সৌদি আরবীয় রাজতন্ত্র হচ্ছে আরবের বৃহত্তম দেশ। এ দেশটির ১% জমি আবাদযোগ্য।  আব্দুল আজিজ ইবনে সৌদ ১৯৩২ সালে ৫টি রাজ্য দখল করে সৌদি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এর রাজধানীর নাম রিয়াদ। আয়তন ২২ লক্ষ ৪০৪ বর্গ কি. মি ( আনুমানিক)। জনসংখ্যা প্রায় ৪ কোটি। দেশটি ১৯৫৬ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে। ১৯৫৭ সালে আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। দেশটিতে বিশাল তেল ভান্ডার রয়েছে। মুসলমানদের পবিত্রস্থান কাবাঘরের জন্য দেশটি  বিশ্বে পরিচিত। ইরান এশিয়া মহাদেশের একটি দেশ। এর জনসংখ্যা প্রায় ৮ কোটি ১০ লক্ষ। আয়তন ১৬ লক্ষ ৪৮ হাজার বর্গ কি. মি.। রাজধানির নাম তেহরান। ইরান শিয়া সম্প্রদায় প্রধান দেশ। ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে দেশটি শিয়াপন্থীরা দখল করে নেয়। শাসন ব্যবস্থা শরিয়া ভিত্তিক। ইরান ১৯৪৮ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে এবং ৬ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। জাপান এশিয়া মহাদেশের শেষপ্রান্তে অবস্থিত। একে সুর্যোদয়ের দেশ বলা হয়। এর রাজধানীর নাম টোকিও।  জনসংখ্যা ১২ কোটি ৬০ লক্ষ ও আয়তন ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ৯৭২ বর্গ কি. মি। দেশটি শৃঙ্খলা, পরিচ্ছন্নতা আর কঠোর পরিশ্রমের কারণে সুপরিচিত। দেশটি দ্বীপরাস্ট্র হওয়ার বহিঃশক্তি কখনো দখলে নিতে পারেনি। ফলে নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য বজায় রাখতে পেরেছে এবং নিজেদের মতো গড়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে।  দেশটি ১৯২১ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং এ পর্যন্ত ৭ বার বিশ্বকাপ খেলায় অংশগ্রহণ করে। দক্ষিণ কোরিয়া এশিয়া মহাদেশের পুর্বদিকে অবস্থিত। পুর্বে কোরিয়া নামে এক রাষ্ট্র ছিল এবং ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জাপানের অধীনে ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া নামে দুটি দেশের জন্ম ঘটে। এর রাজধানীর নাম সিউল ও জনসংখ্যা প্রায় ৫ কোটি ১৪ লক্ষ। আয়তন ৯৮ হাজার ৯১৩ বর্গ কি.মি। দেশটি ১৯৪৮ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং এ পর্যন্ত ১১ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। ইকুয়েডর দক্ষিণ আমেরিকার একটি দেশ। রাজধানীর নাম কিতো, জনসংখ্যা ১ কোটি ৭৭ লক্ষ ও আয়তন ২ লক্ষ ৮৩ হাজার ৯১৩ বর্গ কি. মি। দেশটি ১৯২৬ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং ৪ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। আর্জেন্টিনা দক্ষিণ আমেরিকার একটি দেশ। রাজধানীর নাম বয়েনোস আইরেস। আর্জেন্টিনার জনসংখ্যা প্রায় ৪ কোটি, আয়তন ২৭ লক্ষ ৮০ হাজার ৪ শ বর্গ কি. মি। আর্জেন্টিনা শব্দের অর্থ রৌপ্য। এটি স্পেনের উপনিবেশ থাকায় এর ভাষা স্পেনিশ। নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যও স্পেনীয়। প্রখ্যাত বামপন্থী গেরিলা যোদ্ধা চেগুয়েভারার জন্মস্থান এদেশে। চিলি, প্যারাগুয়ে, ব্রাজিল ও উরুগুয়ে এর পাশ্ববর্তী দেশ। দেশটি দুবার বিশ্বকাপ জয়লাভ করে( ১৯৭৮ ও ১৯৮৬) এবং এ পর্যন্ত ১৮ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। ব্রাজিল দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের একটি দেশ। রাজধানীর নাম ব্রাসিলিয়া ও জনসংখ্যা প্রায় ২০ কোটি, আয়তন ৮৫ লক্ষ ১৪ হাজার ৮৪৭ বর্গ কি. মি। সম্প্রতি বামপন্থী নেতা লুলা দা সিলভা সেদেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।  ব্রাজিল শব্দের অর্থ জলন্ত কয়লা। ১৬ শতকে পুর্তগিজরা দেশটি দখলে নেয়। সেজন্য এর রাস্ট্রীয় ভাষা পুর্তগীজ এবং নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য মিশ্র। ব্রাজিল এ পর্যন্ত ৫ বার বিশ্বকাপ জিতেছে( ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০, ১৯৯৪ এবং ২০০২)। সেদেশে কথিত আছে দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার চেয়েও  জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া কঠিন। উরুগুয়ে দক্ষিণ আমেরিকার একটি দেশ। রাজধানীর নাম মল্টিভিডিও, জনসংখ্যা ৫০ লক্ষ, আয়তন ১ লক্ষ ৭৬ হাজার ২১৫ বর্গ কি.মি। সরকারি ভাষা স্পেনিশ। দেশটি ১৯২৩ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং ২ বার বিশ্বকাপ জিতে( ১৯৩০ ও ১৯৫০)। সেনেগাল আফ্রিকা মহাদেশের একটি দেশ। রাজধানীর নাম ডাকার, জনসভা প্রায় ১৬ কোটি, আয়তন ১ লক্ষ ৯৬ হাজার ৭১২ বর্গ কি.মি। সেনেগাল নদী থেকে দেশের নামটি এসেছে। দেশটি ১৯৬৪ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং ৩ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়।তিউনেশিয়া আফ্রিকা মহাদেশের একটি দেশ। তিউনেশিয়া শব্দের অর্থ রাত কাটাবার স্থান। রাজধানীর নাম তিউনিশ, জনসংখ্যা প্রায় ১১ কোটি, আয়তন ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৬১০ বর্গ কি.মি। দেশটি ১৯৬০ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং ৬ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। মরক্কো আফ্রিকা মহাদেশের একটি দেশ। রাজধানী রাজধানীর নাম রাবাত, জনসংখ্যা ৩ কোটি ৪০ লক্ষ, আয়তন ৭ লক্ষ ১০ হাজার ৮৫০ বর্গ কি.মি। দেশটি ১৯৬০ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং এ পর্যন্ত ৬ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। ক্যামেরুন আফ্রিকা মহাদেশের একটি দেশ। রাজধানীর নাম আউন্ডে, জনসংখ্যা ১ কোটি ৭০ লক্ষ, আয়তন ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার ৪৪২ বর্গ কি.মি। এদেশে ১৯৫৯ সালে ফুটবল সংস্থা গঠিত হয় এবং ১৯৬২ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে। দেশটি ৮ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। ঘানা আফ্রিকা মহাদেশের একটি দেশ। রাজধানীর নাম আক্রা, জনসংখ্যা ২ কোটি ৮০ লাখ, আয়তন ২ লক্ষ ৩৮ হাজার ৫৩৫ কি. মি।  সরকারি ভাষা ইংরেজি। ফিফার সদস্য লাভ করে ১৯৬২ সালে। দেশটি ৫ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়।

যুক্তরাষ্ট্র উত্তর আমেরিকার একটি দেশ। দেশটির সাম্রাজ্য বাদী শক্তি ও পুজিবাদী নীতির কারণে সারাবিশ্বে আলাদা পরিচিতি রয়েছে। ইংরেজিতে ইউএসএ তথা- ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকা বলা হয়। ৫৪টি স্বাধীন রাষ্ট্র (রাজ্য নয়) মিলে যুক্তরাষ্ট্র গঠিত হয়েছে। এর রাজধানীর নাম ওয়াশিংটন ডি.সি.। মোট জনসংখ্যা ৩৩ কোটি ১৪ লক্ষ, আয়তন ৯৮ লক্ষ ৩৩ হাজার ৫১৬ বর্গ কি.মি.। ১৯১৪ সালে ফিফার সদস্য পদ লাভ করে এবং ১৯১৬ সালে আন্তর্জাতিক খেলায় অংশ গ্রহণ করে। মেক্সিকো উত্তর আমেরিকার মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। এর আয়তন ২০ লক্ষ বর্গ কি.মি.। আয়তনে পৃথিবীর ৫ম বৃহত্তম রাষ্ট্র। জনসংখ্যা প্রায় ১১ কোটি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর সীমান্তবর্তী রাষ্ট্র। এদেশের জাতীয় ফুটবল দল ১৯২১ সালে ফিফার সদস্য পদ লাভ করে এবং ১৯২৩ সালে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ফুটবলের প্রতিনিধিত্ব করে। ১৯৮৬ সালে মেক্সিকোতে ১৩ তম বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মেক্সিকো এ পর্যন্ত ১৬ বার বিশ্বকাপে অংশ গ্রহণ করে। কোস্টারিকা দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। নিকারাওয়া, পানামা সীমান্তবর্তী রাষ্ট্র। রাজাধানী স্যানহোসে। জনসংখ্যা প্রায় ৫০ লক্ষ, ও আয়তন ৫১ হাজার ১০০ বর্গ কি.মি.। ১৯২৭ সালে জাতীয় টিম ফিফার সদস্য পদ লাভ করে এবং ১৯২১ সালে আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করে।    

ক্যানাডা উত্তর আমেরিকা মহাদেশের একটি দেশ। আয়তনে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। রাজধানীর নাম অটোয়া। আয়তন ৯৯ লক্ষ ৮৫ হাজার বর্গ কি.মি.। জনসংখ্যা ৩ কোটি ৮৫ লক্ষ দেশটির- শাসন ব্যবস্থা গনতান্ত্রিক এবং বৃটেনের রাজা/রানীকে রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে মান্য করে। এদেশের ফুটবল টিম ১৯১২ সালে ফিফার সদস্য পদ লাভ করে। ১৮৮৫ সালে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহন করে। ক্যানাডা মোট ২ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। নেদারল্যান্ডস ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। দেশটি হল্যান্ড, ডাচ ও ওলন্দাজ নামেও পরিচিত। রাজধানীর নাম অ্যামস্টারডাম,  তিনটি দ্ধীপ নিয়ে এ রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে। জনসংখ্যা ১ কোটি ৬৭ লক্ষ। আয়তন ৪২ হাজার ৬৭৯ বর্গ কি.মি.। এদেশের জাতীয় ফুটবল দল ১৯০৪ সালে ফিফার সদস্য হয়। নেদারল্যান্ড এ পর্যন্ত ১১ বার বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায়। ইংল্যান্ড বা যুক্তরাজ্য ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। এ রাষ্ট্রটি ব্রিটেন নামেও পরিচিত।  পৃথিবীর অর্ধেক রাষ্ট্র এক সময় বৃটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। এর রাজধানীর নাম লন্ডন। জনসংখ্যা ৫ কোটি ৪৩ লক্ষ। বর্তমান আয়তন ১ লক্ষ ৩০ হাজার ২৭১ বর্গ কি.মি.। ইংল্যান্ডের জাতীয় দল ১৯০৫ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে। ইংল্যান্ড এ পর্যন্ত ১১ বার বিশ্বকাপে অংশগ্রহনের সুযোগ পায়।

ওয়েলস দেশটি ইংল্যান্ডের একটি খন্ডিত অংশ নিয়ে গঠিত। রাজধানী কার্ডিফ। জনসংখ্যা ৩১ লক্ষ এবং আয়তন ২০ হাজার ৭৭৯ বর্গ কি.মি.। এদেশের টিম ১৯১০ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে। ওয়েলস এ পর্যন্ত ২ বার বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায়। পোল্যান্ড মধ্য ইউরোপের একটি দেশ। এর রাজধানীর নাম ওয়ারশ। জার্নালী, চেক প্রজাতন্ত্র, ইউক্রেন ও বেলারুশ এর পার্শ্ববর্তী দেশ। এর জনসংখ্যা ৩ কোটি ৮৬ লক্ষ ও আয়তন ৩ লক্ষ ১২ হাজার ৬৭৯ বর্গ কি.মি.। দেশটি ১৯২৩ সালে ফিফার সদস্য পদ লাভ করে এবং এ পর্যন্ত ৯ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। ফ্রান্স ইউরোপ মহাদেশের একটি শক্তিশালী দেশ। এর রাজধানীর নাম প্যারিস। জনসংখ্যা ৬ কোটি ৭১ লক্ষ ও আয়তন ৬ লক্ষ ৪৩ হাজার ৮০১ বর্গ কি.মি.। ফরাসী ফুটবল দল ১৯১৯ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে এবং ১৯০৪ সালে আন্তর্জাতিক খেলার সুযোগ পায়। ফ্রান্স এ পর্যন্ত ২ বার বিশ্বকাপ জিতেছে। ডেনমার্ক ইউরোপ মহাদেশের একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র। রাজধানী কোপেনহেগেন। জনসংখ্যা ৫৪ লক্ষ ৫২ হাজার ও আয়তন ৪৩ হাজার ০৯৪ বর্গ কি.মি.। এদেশের জাতীয় টিম ১৯০৪ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং ১৯০৮ সালে আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করে। দেশটি এ পর্যন্ত ৬ বার বিশ্বকাপ খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। স্পেন ইউরোপ মহাদেশের একটি দেশ। দেশটি এক সময় ল্যাটিন আমেরিকায় সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিল। সে কারনে দক্ষিণ আমেরিকার বহু দেশের সরকারী ভাষা স্পেনিশ এবং নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য স্পেন অধিবাসীদের মতো। এর রাজধানীর নাম মাদ্রিদ। জনসংখ্যা ৪ লক্ষ ৬৩ হাজার ৩২১ জন এবং আয়তন ৫ লক্ষ ৫ হাজার বর্গ কি.মি.। এদেশের জাতীয় টিম ১৯০৪ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে এবং ১৯২০ সালে প্রথম বারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করে। দেশটি এ পর্যন্ত ১ বার বিশ্বকাপ জয়ী হয়।

জার্মানী ইউরোপের একটি শিল্পোন্নত দেশ। দেশটির কারণে ১ম বিশ্বযুদ্ধ ও ২য় বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়। রাজধানীর নাম বার্লিন। জনসংখ্যা ৮ কোটি ২৮ লক্ষ, আয়তন ৩ লক্ষ ৫৭ হাজার ৩৮৬ বর্গ কি.মি.। ফিফার ইতিহাসে জার্মানী একটি সফল দল।দলটি এপযন্ত ৪ বার (১৯৫৪,১৯৭৪,১৯৯০ও ২০০৪) বিশ্বকাপ জয়ী হয়। বেলজিয়াম ইউরোপ মহাদেশের একটি দেশ। রাজধানীর নাম ব্রাসেলম। জনসংখ্যা ১ কোটি ৪২ লক্ষ, আয়তন ৬১ হাজার ২১৫ বর্গ কি.মি.। এদেশের ফুটবল দল ১৯০৪ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে এবং এ পর্যন্ত ১৪ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। ক্রোয়েশিয়া ইউরোপ মহাদেশের একটি দেশ। রাজধানীর নাম জাগ্রেব। জনসংখ্যা ৪৬ লক্ষ, আয়তন ৫৬ হাজার ৫৯৪ বর্গ কি.মি.। দেশটি পূর্বে যুগোশ্লাভিয়ার অংশ ছিল। এদেশের ফুটবল টিম ১৯১২ সালে ফিফার সদস্য পায় এবং ক্রোয়েশিয়া এ পর্যন্ত ৬ বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। সার্বিয়া ইউরোপ মহাদেশের একটি দেশ। পূর্বে যুগোশ্লাভিয়ার অংশ ছিল। ১৯৯২ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। এর রাজধানীর নাম বেলগ্রেড। জনসংখ্যা প্রায় ৬১ লক্ষ, আয়তন ৮৮ হাজার ৩৬১ বর্গ কি.মি.। ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেলার সুযোগ পায় এবং এ পর্যন্ত ১২ বার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে।সুইজারল্যান্ড ইউরোপ মহাদেশে অবস্থিত। এটি একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। এর রাজধানীর নাম বের্ণ। জনসংখ্যা ৭৫ লক্ষ, আয়তন ৪১ হাজার ২৮৫ বর্গ কি.মি.। ১৯০৪ সালে ফিফার সদস্য পদ লাভ করে এবং একই বছরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেলার সুযোগ পায়। সুইজারল্যান্ড এ পর্যন্ত ১২ বার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে।

পুর্তগাল ইউরোপের একটি দেশ। নৌবিদ্যায় পারদর্শিতার কারণে এক সময় পৃথিবী ব্যাপী পুর্তগীজদের ব্যবসা ছিল। ল্যাটিন আমেরিকায় এরা সাম্রাজ্য বিস্তার করে। ব্রাজিল এক সময় এদেশের অধিনস্ত ছিল। ফলে ব্রাজিলের সরকারি ভাষা পুর্তগীজ। এর রাজধানীর নাম লিসবন। জনসংখ্যা ১ কোটি ৬৪ লক্ষ এবং আয়তন ৯২ হাজার ৩৫৫ বর্গ কি.মি.। দেশটি ১৯২৩ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং ১৯২১ সালে আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করে। পুর্তগাল এ পর্যন্ত ৮ বার বিশ্বকাপ খেলার অংশগ্রহনের সুযোগ পায়। অস্ট্রেলিয়া ওশেনিয়া মহাদেশের একটি দেশ। অস্ট্রেলিয়া ছাড়া ওশেনিয়া মহাদেশের আর কোন দেশ বিশ্বকাপ খেলায় সুযোগ পায়নি। এর রাজধানীর নাম ক্যানবেরা। জনসংখ্যা ২ কোটি ৫৯ লক্ষ ২৫ হাজার ৬০০ এবং আয়তন ৭৬  লক্ষ ৯২ হাজার ০২৪ বগ কি.মি.। এদেশের জাতীয় দল ১৯৬৩ সালে ফিফার সদস্য লাভ করে এবং  ১৯২২ সালে আন্তজাতিক খেলায় অংশগ্রহনের সুযোগ পায়। এদলটি এপযন্ত ৬ বার বিশ্বকাপ খেলায় অংশগ্রহন করে।  (সূত্রঃ ইউকিপিডিয়া ও বিভিন্ন পত্রিকা)


লেখক: গণতন্ত্রায়ন ও গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকার বিষয়ক গবেষক এবং সদস্য, সিডিএলজি।
ই-মেইল: musha.pcdc@gmail.com