দীর্ঘ ৫০ বছরেও বয়স্ক বা বিধবা ভাতা না পাওয়া অসহায় সম্বলহীন ৬৫ উর্দ্ধ এক বিধবার করুন কাহিনী
- প্রকাশিত সময় ০২:২৪:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৩
- / 69
পেটের দায়ে ৬৫ উর্ধের বিধবা ভিক্ষুক হেলেজান এখন ঘুরছে দোকানে দোকানে,প্রতিদিন যার আয় ৫০ থেকে ১০০ টাকা আর এ দিয়েই তার একমাত্র বিবাহযোগ্য ও ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত ২০/২২ বছরের মেয়ে বেলীকে নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে,গত ৪২ বছরেও তার ভাগ্যে জোটে নাই বয়স্ক বা বিধবাভাতা।
পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর বাজারে প্রতিদিনের মতই গত ১৩ ডিসেম্বর দোকানে দোকানে ভিক্ষা করার সময় সাক্ষাতে জানা যায় হেলেজানের করুন কাহিনী। তার বাড়ী পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের গাছপাড়া গ্রামে,স্বামীর নাম মৃত মজিবর রহমান। স্বামীর মৃত্যুর পর গত ৫০ বছরেও সে বয়স্ক কিংবা বিধবা ভাতা তার ভাগ্যে জোটে নাই বলে কেঁদে ফেলে। তার নাই কোনো সহায়-সম্বল,আছে শুধু ছোট্ট একখন্ড জমির ওপর একটি কুঁড়েঘর।
হেলেজান কান্না জড়িত কন্ঠে করুন সুরে জানান, ১৯৭১ সানের যুদ্ধের সময় তার স্বামী মারা যায়। তখন তার ২ মেয়ে ও ১ ছেলে। ছেলেটা ইতিমধ্যে মারা গেছে, বড় মেয়ের বিয়ে হলেও জামাই মাদকাসক্ত, মেয়ের দুঃখকষ্টের সীমা নাই। ছোট মেয়ে বেলী খাতুনের ব্রেন টিউমার নিয়ে অসহনীয় কষ্টে দিন কাটায়, বিয়েও দিতে পারে নাই।
হেলেজান আরও জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর গত ৫০ বছর অন্যের বাড়ীতে কাজ করে, ঢেঁকিতে ধান বেনে পেট চালাতেন। কিন্তু দিন বদলে যাওয়ায় এবং বয়সের ভারে সে আর কাজ করতে না পেরে পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে গত ২ বছর দোকানে-দোকানে ভিক্ষা করা শুরু করেছে। কেউ ২ টাকা, কেউ ৫ টাকা, অনেকেই দেয় না। এই সামান্য আয় দিয়েই মেয়ের ঔষধ এবং পেট চালাতে হয়। তার দুঃখ, স্বামীর মৃত্যুর পর ৪২ বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত কেউ তাকে বয়স্ক বা বিধবা ভাতার কার্ড করে দেয় নাই, মেম্বর, চেয়ারম্যান, নেতাদের কাছে বার-বার ধর্ণা দিয়েও কারও মন গলাতে পারেন নাই। হেলেজানের দুঃখ তার মৃত্যুর পর তার অসহায় মেয়ের কি হবে!