ভাঙ্গুড়ায় পরকিয়ায় ভাঙ্গল সুখের ঘর, বিপাকে অবুঝ দুই সন্তান
- প্রকাশিত সময় ১১:১৬:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
- / 144
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় মনোয়ারুল আলম-আফিয়ার দাম্পত্য জীবনে পরকীয়ার কারণে তাদের বিবাহিত জীবনের প্রায় এক যুগ পর বিচ্ছেদ হতে চলেছে। ফলে তাদের ঘরে অবুঝ দুই সন্তান পিতা মাতার বিচ্ছেদের কারণে পড়েছে বিপাকে।
অবশ্য স্বামী-স্ত্রী উভয়ই একে অন্যকে পরকীয়ার সন্দেহ থেকে শুরু করে তাদের সংসারে বর্তমানে অশান্তি তুঙ্গে। মনোয়ারুল আলম পরিবার পরিকল্পনা ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিদর্শক পদে কর্মরত। যদিও পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মনোয়ারুল আলম মঞ্জু বলছেন, তিনি তার অবাধ্য স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েছেন। কিন্তু তার স্ত্রী আফিয়া খাতুন বলেছেন, কাগজ হাতে পাই নি। এদিকে তাদের ঘরে জন্ম নেওয়া দুই সন্তানদের দাবী, পিতামাতার মধ্যকর ঝামেলা মিমাংসা হয়ে তার একত্রে থাকুক।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় এক যুগ আগে দিয়ার পাড়া গ্রামের মোকছেদ আলীর পুত্রের সাথে বেতুয়ান গ্রামের ওয়াজেদ মিয়ার কন্যা আফিয়ার সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল।
অবশ্য মনোয়ারুল আলম মঞ্জুর এটি ছিল দ্বিতীয় বিবাহ। কারণ মঞ্জু এর আগে আরও একটি বিবাহ করেছিলেন। কিন্তু সেখানেও ববিবনা না হওয়ার কারণে বিবাহের অল্প কিছু দিনের মধ্যেই তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছিল। মনোয়ারুল-আফিয়ার দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসার ভালোই কাটছিল। এভাবে তাদের সংসার আলো করে একে একে দুইটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। আফিয়ার স্বামী মনোয়ারুল আলম মঞ্জু ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক হওয়ার সুবাদে বিভিন্ন বিবাহিত নারীর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। তারই ধারাবাহিকতায় জনৈক নারীর সাথে ম্যাসেঞ্জারে কথা বলতে থাকে। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে তারা সামাজিক যোগায়োগ মাধ্যম, হোটস আপ এর মাধ্যমে মোবাইল ফোনে দীর্ঘ সময় চ্যাট করা থেকে এবং একে অপর কে সন্দেহ করতে থাকে। সন্দেহ থেকে মনোয়ারুল আলম মঞ্জু ও স্ত্রী আফিয়ার মধ্যে মানসিক দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। এভাবে মনেয়ারুল আলম তার স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চলতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে প্রথমে স্থানীয়দের সমন্বয়ে একাধিক শালিশ বৈঠক করলে বাস্তবে কোন কাজের কাজ হয় নি। যার কারণে স্বামী স্ত্রী দুই মেরুতে অবস্থান করেন। শেষ পর্যন্ত তাদের সংসার ভাঙ্গার পর্যায়ে অবস্থান করছে। বিপাকে পড়েছে তাদের ঘরে জন্ম নেওয়া আব্দুলাহ আল আরাফাত (১১) আহম্মেদ আল আরেফিন (৫) নামের দুইটি অবুঝ শিশু। এদিকে মনোয়ার আলম তার স্ত্রীকে বির্ভোস দিয়েছেন মর্মে দাবী করেছেন।
কিন্তু তার স্ত্রী আফিয়া স্বামীর গ্রামের বাড়ি দিয়ার পাড়াতে অবস্থান নিয়েছেন। মনোয়ারুল আলম উপজেলার দিয়ার পাড়ার বাসিন্দা হলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে পৌর সদরের সরদার পড়ায় বসবাস করছেন। ঘটনার বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা ইউনিয়ন পরিদর্শক মনোয়ারুল আলম মঞ্জু বলেন,স্ত্রীর আফিয়ার সন্দেহ জনক আচরণ, ম্যাসেঞ্জারে পর পুরুষের সাথে কথপোকথনসহ নানান বিষয়ে তার দৃষ্টিগোচর হলে তাকে বার বার সংশোধন করার চেষ্টা করেও তিনি ব্যর্থ হয়ে আইনী প্রক্রিয়ায় তাকে ডির্ভোস দিয়েছেন।
অপর দিকে জনৈক নারীর সাথে পরকিয়ার কথা অস্বীকার করলেও তার সাথে একাধিক মাধ্যমে ভিডিও কলে কথা বলার কথা স্বীকার করেছেন এই কর্মকতা।
এদিকে মনোয়ারুল আলমের স্ত্রী আফিয়া খাতুনের দাবী, তার স্বামী মনোয়ারুল আলম মঞ্জু বিবাহের প্রথম দিকে ভালো ছিলেন কিন্তু গত প্রায় দু‘বছর ধরে অন্যের স্ত্রীর সাথে অনৈতিকভাবে গোপনে যোগাযোগ করার কারণে তার সুখের সংসার এক অশান্তির আগুনে জ্বলছে । ডির্ভোসের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ওই ধরণের কোনো কাগজ হাতে পাই নি। তিনি স্বামী সন্তান নিয়ে এক সাথে বসবাস করার আগ্রহও প্রকাশ করেন।
মনোয়ারুল আলম-আফিয়ার দম্পতির ঘরে জন্ম নেওয়া বড় সন্তান আব্দুলাহ আল আরাফাত (১১) বলেন, তার পিতা—মাতা ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক এবং তারা আগামীতে মা-বাবার সাথে বসবাস করতে চান।
এ ব্যপারে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার মোসাঃ রহিমা খাতুন বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই।
এব্যপারে ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মোঃ রাশিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে অধিকতর খোঁজ খবর নিয়ে পরে জানানো হবে।