মাদক সেবন ও বেচাকেনায় বাঁধা দেয়ায় মেডিকেল কলেজের স্টাফের উপর হামলা, গ্রেফতার ১
- প্রকাশিত সময় ০৬:১০:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
- / 147
অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাসহ বিস্তর অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে পাবনা সদরের ১৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এ এইচ এম রুবেলের বিরুদ্ধে। এই কাউন্সলির রুবেলের ছত্রছায়ায় তার সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়ে পরেছে পাবনা মানষিক হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা।
সম্প্রতি মেডিকেল কলেজের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রুবেল কাউন্সলিরের সন্ত্রাসী বাহিনীর ৮জন প্রকাশ্যে মেডিকেল কলেজের স্টাফকে জিআই পাইপ ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মম ভাবে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। এ বিষয়ে মেডিকেল কলেজের স্টাফ মোঃ শাকিল শেখ জানান, রুবেলের লোকজন মেডিকেল কলেজের পরিত্যাক্ত ভবনে মাদক বেচা কেনা করে আমি প্রথমে একদিন নিষেধ করি। আর আমার এই নিশেদ করাটাই হয়েছিল ভুল। তার সন্ত্রাসীরা আমাকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। আমি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকলে পরবর্তীতে আহত অবস্থায় আমাকে আমার সহকর্মীরা উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। এ পরিস্থিতিতে রুবেলের অত্যাচার থেকে মুক্তি চায় মেন্টাল ও মেডিকেল কলেজ এলাকার সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে বুদের হাট এলাকার যুবলীগ নেতা আজাদ শেখ অভিযোগ করে বলেন, রুবেল কাউন্সিলরের বাহিনীর এমন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবারই প্রথম নয়। রুবেলের ছত্রছায়ায় এলাকায় কিশোর গ্যাং সহ গড়ে উঠেছে একাধিক সন্ত্রাসী গ্রুপ। এই কাউন্সিলর তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে এলাকায় অস্ত্র ও মাদক ব্যাবসা পরিচালনা করে আসছেন। এমনকি মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের পাশেই অবস্থিত পরিত্যাক্ত ভবনগুলো তাঁদের জন্য হয়ে উঠেছে মাদক কেনাবেচা ও মাদক সেবনের নিরাপদ আশ্রয়।
নাম বলতে অনিচ্ছুক কাশিপুর মোড়ের একাধিক ব্যবসায়ী ও সচেতন ব্যাক্তিরা জানান, কি আর বলবো টাকার জোর থাকলে যা হয় তারা কোটি টাকার মানুষ বাড়ী, গাড়ী ও টাকা আছে। মেন্টালের প্রতিটি কাজ করে তারা। তাদের ভালো মন্দ দেখার কেউ নেই। রুবেলেরর কথা না শুনলে তার উপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। তার সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হতে হয় অনেককেই।
এ বিষয়ে পাবনা পৌর সভার ১৫ নং ওয়ার্ড, কাউন্সিলর শাহীন শেখ বলেন, মাদক সেবন ও বেচাকেনায় বাঁধা দেয়ায় আমার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে রুবেলের সন্ত্রাসী বাহিনী কুঁপিয়েছে। অস্ত্র ও মাদক সহ এমন কোন ব্যবসা নেই যে সেটা রুবেলের নেতৃত্বে তার ছত্রছায়ায় থাকা ক্যাডাররা করে না। এই রুবেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। বিভিন্ন অপকর্ম করেও রুবেলের অনুসারী হওয়ায় বার বার পার পেয়ে যাচ্ছে তারা।
এ ঘটনায় জড়িত হিরোইন ব্যবসায়ী রাজুকে আটক করেছে পুলিশ। রাজুর নামে ১৫ টির বেশি মামলা আছে। রাজু ধরা খেলেই তার কাছে পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণ মাদক। এ বিষয়ে অভিযুক্ত পৌরসভার ১৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এ এইচ এম আরিফুল রুবেল এ-র সাথে সাক্ষাতে কথা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মেডিকেল কলেজে যাকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে সেই ছেলেটা আমারই কর্মচারী তাকে আমি কেন মারতে যাব। রাজনৈতিক ভাবে আমার সুনাম ক্ষুন্ন করতেই শাহীন ও তার লোকজন এমন অভিযোগ করছে। প্রতিহিংসার কারণে আমার ছোট ভাতিজার নামেও মামলা দিয়েছে শাহিন।
এবিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, এ ঘটনায় ১০ জনকে আসামী করে ১৩-০২-২০২৩ ইং তারিখে সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে। পরপরই পুলিশ অন্যতম আসামী রাজুকে আটক করেছে। বাকী আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যহত আছে। এ ঘটনায় মাদকের সম্পৃক্ততা থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।