ঢাকা ১০:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

ঈশ্বরদীতে প্রকাশ্যে স্ত্রীর শরীরে পেট্টোল ঢেলে আগুন দিয়েছে পাষন্ড স্বামী

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ১০:০০:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০২৩
  • / 131

পাবনার ঈশ্বরদীতে পারিবারিক কলহের জেরে প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রীর শরীরে পেট্টোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে শরীর ঝলসে দিয়েছে পাষন্ড স্বামী।

সোমবার ৮ মে দুপুরে উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া গরুর হাটে রানার চায়ের দোকানে এই রোমহর্ষক ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত মো. রনি (৩০) আওতা পাড়া বাজার এলাকার মো. রমজান সরদারের ছেলে এবং ভুক্তভোগী মোছা. নিলুফা ইয়াসমিন হ্যাপি (২৫) নেত্রকোনা জেলার উলুকান্দার আব্দুল লতিফ আকন্দের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে এবং রনির দ্বিতীয় স্ত্রী।

ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অরবৃন্দ সরকার।

প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও থানা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩ বছর আগে ফেসবুকে সম্পর্কের সূত্রধরে ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়ার রমজানের ছেলে রনির সাথে নেত্রকোনার উলুকান্দার আব্দুল লতিফ আকন্দের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিনের বিয়ে হয়।

বিয়ের পরে হ্যাপী জানতে পারে রনির আগে থেকেই স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর নিজের বাড়ীতে দ্বিতীয় স্ত্রী হ্যাপীকে না তুলে তাকে নিয়ে রনি পাকশীর রূপপুরে ভাড়াবাড়ীতে থাকতেন। রনির দেয়া ওয়াদা মোতাবেক ভাড়া বাড়ি ছেড়ে হ্যাপী রনির নিজ বাড়ীতে বসবাস করতে চাইলে তাদের মধ্যে প্রায়ই কলহ সৃষ্টি হতো।

ঘটনারদিন দুপুর ১টার দিকে স্বামীর বসতবাড়ীতে বসবাসের জন্য রনির অনুমতি ছাড়াই আওতাপাড়া গেলে উভয়ের মধ্যে চরম বাকবিতন্ডা তৈরী হয়।

এ সময় রনি হ্যাপিকে বেধড়ক মারপিট করে হ্যাপিকে টেনে হিচড়ে বাজারের মধ্যে একটি চায়ের দোকানে এসে বসেন। এক পর্যায়ে রনি উত্তেজিত হয়ে স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে মারার জন্য বন্ধু পলাশকে পেট্রোল কিনে আনতে বলে। রনির কথামত পলাশ পাশের একটি দোকান থেকে পেট্রোল এনে রনিকে দিলে সে উত্তেজিত হয়ে হ্যাপীর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

এসময় হ্যাপির চিৎকারে স্থানীয়রা হ্যাপীর শরীরে পানি ঢেলে আগুন নেভান। হ্যাপির শরীরে আগুন দিতে গিয়ে রনিরও দুই হাত আগুনে ঝলসে যায়।

পরে স্থানীয়রা হ্যাপিকে উদ্ধার করে সিএনজিযোগে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেন।

হ্যাপির অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পাবনা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

হ্যাপির শরীরের ৬০ শতাংশ ঝলসে যাওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। হ্যাপি বর্তমানে রামেকের বার্ন ইউনিটে শংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. আফরোজা নাজনীন বলেন, হ্যাপির শরীরের ৩২ শতাংশ পুড়ে গেছে এবং রনির সাত শতাংশ পুড়েছে। তাই রনি আশঙ্কামুক্ত। তবে পেট্রলের আগুনের কারণে হ্যাপির অবস্থা আশঙ্কাজনক।

দগ্ধ হ্যাপিকে ঢাকা স্থানান্তরের জন্য বলা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন রামেক হাসপাতাল বার্ন ইউনিটের প্রধান।

খবর পেয়ে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রনিকে গ্রেফতার করে। আগুন জ্বালানোর সময় রনিও কিঞ্চিৎ পুড়ে আহত হওয়ায় তাকেও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলেন প্রসাশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অরবিন্দ সরকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং রনিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ঘটনার দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পাবনা পুলিশ সুপার মোঃ আকবর আলী মুন্সি। এব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া অব্যহত রয়েছে বলে তিনি জানান।

অভিযুক্ত রনির বিরুদ্ধে মাদক, চাঁদাবাজি, হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। শুধু তাই নয় তার ত্রাসের কারনে প্রাণ বাঁচাতে সানোয়ার নামের একজন বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন বলেও এলাকাবসী জানিয়েছেন।

এই রকম আরও টপিক

ঈশ্বরদীতে প্রকাশ্যে স্ত্রীর শরীরে পেট্টোল ঢেলে আগুন দিয়েছে পাষন্ড স্বামী

প্রকাশিত সময় ১০:০০:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০২৩

পাবনার ঈশ্বরদীতে পারিবারিক কলহের জেরে প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রীর শরীরে পেট্টোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে শরীর ঝলসে দিয়েছে পাষন্ড স্বামী।

সোমবার ৮ মে দুপুরে উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া গরুর হাটে রানার চায়ের দোকানে এই রোমহর্ষক ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত মো. রনি (৩০) আওতা পাড়া বাজার এলাকার মো. রমজান সরদারের ছেলে এবং ভুক্তভোগী মোছা. নিলুফা ইয়াসমিন হ্যাপি (২৫) নেত্রকোনা জেলার উলুকান্দার আব্দুল লতিফ আকন্দের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে এবং রনির দ্বিতীয় স্ত্রী।

ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অরবৃন্দ সরকার।

প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও থানা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩ বছর আগে ফেসবুকে সম্পর্কের সূত্রধরে ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়ার রমজানের ছেলে রনির সাথে নেত্রকোনার উলুকান্দার আব্দুল লতিফ আকন্দের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিনের বিয়ে হয়।

বিয়ের পরে হ্যাপী জানতে পারে রনির আগে থেকেই স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর নিজের বাড়ীতে দ্বিতীয় স্ত্রী হ্যাপীকে না তুলে তাকে নিয়ে রনি পাকশীর রূপপুরে ভাড়াবাড়ীতে থাকতেন। রনির দেয়া ওয়াদা মোতাবেক ভাড়া বাড়ি ছেড়ে হ্যাপী রনির নিজ বাড়ীতে বসবাস করতে চাইলে তাদের মধ্যে প্রায়ই কলহ সৃষ্টি হতো।

ঘটনারদিন দুপুর ১টার দিকে স্বামীর বসতবাড়ীতে বসবাসের জন্য রনির অনুমতি ছাড়াই আওতাপাড়া গেলে উভয়ের মধ্যে চরম বাকবিতন্ডা তৈরী হয়।

এ সময় রনি হ্যাপিকে বেধড়ক মারপিট করে হ্যাপিকে টেনে হিচড়ে বাজারের মধ্যে একটি চায়ের দোকানে এসে বসেন। এক পর্যায়ে রনি উত্তেজিত হয়ে স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে মারার জন্য বন্ধু পলাশকে পেট্রোল কিনে আনতে বলে। রনির কথামত পলাশ পাশের একটি দোকান থেকে পেট্রোল এনে রনিকে দিলে সে উত্তেজিত হয়ে হ্যাপীর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

এসময় হ্যাপির চিৎকারে স্থানীয়রা হ্যাপীর শরীরে পানি ঢেলে আগুন নেভান। হ্যাপির শরীরে আগুন দিতে গিয়ে রনিরও দুই হাত আগুনে ঝলসে যায়।

পরে স্থানীয়রা হ্যাপিকে উদ্ধার করে সিএনজিযোগে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেন।

হ্যাপির অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পাবনা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

হ্যাপির শরীরের ৬০ শতাংশ ঝলসে যাওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। হ্যাপি বর্তমানে রামেকের বার্ন ইউনিটে শংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. আফরোজা নাজনীন বলেন, হ্যাপির শরীরের ৩২ শতাংশ পুড়ে গেছে এবং রনির সাত শতাংশ পুড়েছে। তাই রনি আশঙ্কামুক্ত। তবে পেট্রলের আগুনের কারণে হ্যাপির অবস্থা আশঙ্কাজনক।

দগ্ধ হ্যাপিকে ঢাকা স্থানান্তরের জন্য বলা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন রামেক হাসপাতাল বার্ন ইউনিটের প্রধান।

খবর পেয়ে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রনিকে গ্রেফতার করে। আগুন জ্বালানোর সময় রনিও কিঞ্চিৎ পুড়ে আহত হওয়ায় তাকেও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলেন প্রসাশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অরবিন্দ সরকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং রনিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ঘটনার দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পাবনা পুলিশ সুপার মোঃ আকবর আলী মুন্সি। এব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া অব্যহত রয়েছে বলে তিনি জানান।

অভিযুক্ত রনির বিরুদ্ধে মাদক, চাঁদাবাজি, হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। শুধু তাই নয় তার ত্রাসের কারনে প্রাণ বাঁচাতে সানোয়ার নামের একজন বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন বলেও এলাকাবসী জানিয়েছেন।