অরক্ষিত বেড়িবাঁধ, ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাছে তাদের
- প্রকাশিত সময় ০১:৪৩:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অগাস্ট ২০২৩
- / 111
পটুয়াখালীর পায়রা, তেঁতুলিয়া, লাউকাঠী, নদীর অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। ইতিমধ্যে পায়রার গর্ভে বিলীন হয়েছে বাজারসহ সহস্রাধিক বসতবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর অরক্ষিত বাঁধগুলো মেরামত না হওয়ায় ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাছে স্থানীয়দের।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পটুয়াখালীতে মোট এক হাজার ৩০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ২২ কিলোমিটার, বাকি ৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ পুরো ক্ষতিগ্রস্ত। জেলায় স্থায়ীভাবে মেরামত না হওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে অরক্ষিত অবস্থায় পরে আছে প্রায় ৬০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। সিগন্যাল ও অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারে পানি উঠে তলিয়ে যায় ওই সব এলাকার মানুষের বসতবাড়ি। আতঙ্কে থাকেন ওইসব এলাকার হাজার হাজার মানুষ।
পায়রা ও লাউকাঠি নদীর অব্যাহত ভাঙনে কয়েকটি গ্রাম ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ঘরবাড়ি, ফসলের ক্ষেত, গাছপালা সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে এসব গ্রামের শত শত পরিবার। চিরতরে মুছে গেছে তাদের ঠিকানা। এসব এলাকায় মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
আঙ্গারিয়া গ্রামের হুমায়ন কবির বলেন, আমাদের দুই ঘরবাড়ি এই পায়রা নদী গ্রাস করে নিয়ে গেছে। ঘরবাড়ি ফসলের জমি হারিয়ে এখন আমরা নিঃস্ব হয়েছি।
বাহেরচর গ্রামের রমেস চন্দ্র দাস বলেন, আমাদের নিজেদের বাড়িসহ ফসলের জমি, মসজিদ-মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপনা এই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন আমরা পরের জমিতে একটি ছাপরা ঘর করে কোনো রকম বসবাস করছি। কিন্তু প্রতি অমাবস্যা-পূর্ণিমার জোয়ারে আমাদের সেই ঘর তলিয়ে যায়।
একই এলাকার ফুলবানু বেগম বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে ৪০ বছরের বেশি হয়েছে। আমি যখন প্রথম এই গ্রামে বৌ হয়ে এসেছি তখন আমাদের বাড়ি ছিল নদীর মাছ খানে। আজ ভাঙতে ভাঙতে সব শেষ হয়ে গেছে। এখন বাকি যে টুকু জমি আছে সেই খানে একটি ছাপড়া ঘর তুলে কোনো রকম বসবাস করছি। যদি এই ভাঙা বেড়িবাঁধ ঠিক না করা হয় তা হলে শেষ সম্বল টুকু থাকবে না।
পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান বলেন, বর্তমানে ভাঙন রোধে আমরা অস্থায়ীভাবে কাজ করবো। তবে শিগগিরই ভাঙনরোধে স্থায়ীভাবে সমাধানের কথা জানালেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।