পদ্মানদী থেকে বালু চুরির দায়ে ৮৫ লাখ টাকার মালামালসহ আটক-২
- প্রকাশিত সময় ০৬:১০:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ মার্চ ২০২৪
- / 142
ঈশ্বরদীর সাঁড়ায় পদ্মানদী থেকে সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত চুরি করে ভ্রাম্যমান ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের দায়ে ৮৫ লাখ টাকার মালামালসহ ২ জনকে আটক করেছে লক্ষ্মীকুন্ডা নৌপুলিশ ফাঁড়ি।
অনেক চেষ্টার পর স্থানীয় এক প্রভাবশালী বালুখাদক জনপ্রতিনিধির আশ্রিত বালু চুরির সাথে সংশ্লিষ্ট ২ বালু জনকে আটক করেছে লক্ষ্মীকুন্ডা নৌপুলিশ ফাঁড়ি। এবং বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত ড্রেজার ও বাল্কহেডসহ ৮৫ লাখ টাকার মালামাল জব্দ করা হয়েছে।
রবিবার ০৩ মার্চ রাত আনুমানিক সোয়া একটার সময় ঈশ্বরদী উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের সাঁড়াঘাট এলাকার জৈনক উজ্জলের বাড়ির পশ্চিম পাশে পদ্মানদী থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকৃকতরা হলেন, মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার বাউশিয়া পশ্চিম নয়াকান্দি এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ শাহজালাল (৪০) ও একই এলাকার মৃত চান মুন্সির ছেলে মোঃ জালাল উদ্দিন (৫৭)।
স্থানীয় ও নৌপুলিশ সুত্রে জানা যায়, শুকনো মৌসুম শুরু হওয়ায় উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের সাঁড়াঘাট এলাকায় পদ্মানদীতে পানি কমে গেছে। এই সুযোগে স্থানীয় প্রভাবশালী বালু খাদক ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা চুরি করে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলন শুরু করেছে। বিষয়টি লক্ষ্মীকুন্ডা নৌপুলিশ ফাঁড়ির নজরে আসলে সাঁড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমদাদুল হক রানা সরদারের ভাইয়ের ছেলে সাগর সরদারকে ডেকে নদী থেকে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলন না করার জন্য সতর্ক করে। এরপরও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যহত থাকে।
সুত্র মতে, বালু খাদকরা প্রতিদিন রাত ৮টার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত চুরি করে ঈশ্বরদীর সাঁড়াঘাট এলাকায় ভ্রাম্যমানভাবে নৌকাতে ড্রেজার ও বালু চোষক লাগিয়ে বালু উত্তোলন করে। নৌপুলিশ বা থানা পুলিশ নদী এলাকায় গেলেই বালু চোরেরা ঈশ্বরদীর সীমানা ছেড়ে লালপুরের দিকে চলে যায়। একারণে তাদের আটক করা সম্ভব হচ্ছিল না। কিন্তু রোববার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সাঁড়ার পদ্মানদীতে চুরি করে বালু উত্তোলনের সময় দুইজনকে আটক করা হয়। সেসময় বালু ভর্তি একটি বাল্কহেড ও একটি বালু চোষক জব্দ করা হয়। বাল্কহেড ও বালু চোষকের বাজার মুল্য প্রায় ৮৫ লাখ টাকা।
লক্ষ্মীকুন্ডা নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) মোঃ এমদাদুল হক জানান, আটককৃত ড্রেজার ও বাল্কহেড সাঁড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমদাদুল হক রানা সরদার ও তাঁর ভাতিজা সাগর সরদারের বলে জানা গেছে।
ওসি আরও জানান, এর আগে সাগর সরদারকে ডেকে বালু উত্তোলন না করার জন্য সতর্ক করা হয়েছিল। দুইজনকে আটকসহ ড্রেজার ও বালু চোষক জব্দ করা হলে সাগর সরদার সেগুলো ছেড়ে দেওয়ার জন্য নৌপুলিশকে মোবাইলে অনুরোধ করেছে।
জব্দকৃত মালামালসহ আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের জন্য ঈশ্বরদী থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। নৌপুলিশের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ওসি।
এবিষয়ে সাগর সরদার জানান, আটককৃতরা তার লোক না। জব্দকৃত মালামালও তার না। তিনি সাঁড়াঘাটে বালুর ব্যবসা করেন না। তিনি আড়মবাড়িয়াতে বালুর ব্যবসা করেন।
এবিষয়ে সাঁড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ ইমদাদুল হক রানা সরদার জানান, আটককৃতরা তার লোক না। জব্দকৃত মালামালও তার ভাড়া করা না। বালু উত্তোলনের বিষয়ে তাঁকে জড়িয়ে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তা মিথ্যা বলেও দাবী করেন চেয়ারম্যান রানা সরদার।