ঢাকা ০৭:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

ঈশ্বরদীর জমজম ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত সময় ১০:১০:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ মার্চ ২০২৪
  • / 151

জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতাল।



পাবনার ঈশ্বরদীতে জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসকের সিদ্ধান্তহীনতা ও অবহেলায় এক নবজাতকের (ছেলে) মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর ঘটনায় পাবনা সিভিল সার্জন ও থানায় অভিযোগ দায়ের করে প্রতিকার না পাওয়ার শংকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিমাংসার পথে হাঠছেন অভিযোগকারী।

সোমবার ১১মার্চ বিকেলে মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানায় অভিযোগকারী নবজাতকের নানা ইমারত আলী ও নানী।

জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসকের সিদ্ধান্তহীনতা ও অবহেলায় এক নবজাতকের (ছেলে) মৃত্যুর ঘটনায় টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে। কারন এর আগেও বহুবার ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় ঈশ্বরদীর বিভিন্ন ক্লিনিকে নবজাতকসহ প্রসুতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

ভুক্তভোগিদের সুত্রে জানা যায়, জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতাল নামেই শুধু স্পেশালাইজড হাসপাতাল। এখানে তেমন কোন স্পেশালাইজড চিকিৎসক নেই। সেবাও নেই। শুধু মাত্র ডেলিভারি চিকিৎসাই রয়েছে। আর নামের কারনেই রোগী ও তার অভিভাবকরা সঠিক সেবা নিতে এসে প্রতারিত হচ্ছেন। কিন্তু বিষয়টি দেখার কেউ নেই।

থানায় দায়ের করা অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ৪ মার্চ সকালে ঈশ্বরদীর সলিমপুর ইউনিয়নের চরমিরকামারি গ্রামের ইমারত আলীর মেয়ে ইসরাত জাহান সিন্তা প্রসব বেদনা নিয়ে পূর্ব থেকে চিকিৎসা দেওয়া ডাক্তার নাফিসা কবিরের পরামর্শে তার মালিকানাধীন জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে একবার নরমাল ডেলিভারি আরেকবার অপারেশন করার মাধ্যমে সন্তান ডেলিভারী করার কথা বলে প্রসুতির অভিভাবকদের বিভ্রান্তিতে ফেলেন ডাক্তার নাফিসা কবির। অবশেষে দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর নরমালে মৃত ছেলে সন্তান প্রসব করান ডাক্তার নাফিসা কবির। এরপর প্রসুতির অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এতে রোগির অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রসুতিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পুর্ব থেকে ডাক্তার নাফিসা কবিরের চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রসুতি এবং বাচ্চার অবস্থা ভাল ছিল মর্মে জানিয়েছিলেন ডাক্তার।

প্রসুতির অভিভাবকরা জানান, ইসরাত জাহান সিন্তা জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতালের ভর্তির পর থেকে চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা প্রদানে চরম অবহেলা করেন। মৃত বাচ্চা প্রসব ও প্রসুতির অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে রোগির অবস্থায় আশংকাজনক হওয়ায় রামেক-এ নেওয়ার পরামর্শ দেন। তখন তাৎক্ষণিক ভাবে প্রসুতিকে প্রথমে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রসুতির অবস্থার আরও অবনতি হলে রামেক-এ ভর্তি করা হয়। একই সঙ্গে রোগীর শরীরে ১৮ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। তার জীবন এখনও আশংকাজনক।

নবজাতকের নানা ইমারত আলী ও নানী জানান, এই বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবীতে রোববার থানায় ও পাবনা সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু প্রতিকার পাবো না এমনকি সন্তানও ফিরে পাবো না। আবার মেয়ে ইসরাত জাহান সিন্তার যে ক্ষতি হয়েছে তাও পূরণ হবে না। তাই অভিযোগের দিকে না তাকিয়ে এক সাংবাদিকের মাধ্যমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিমাংসা করে নেওয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ডাক্তার নাফিসা কবির জানান, চিকিৎসা প্রদানে তাদের কোনো অবহেলা ছিল না। বাচ্চার পজিশন ভাল ছিল। প্রচুর পরিমানে প্রসব বেদনা ছিল। এই কারনে নরমাল ডেলিভারি করা হয়েছে। কিন্তু জন্মগত সমস্যা নবজাতকটি জন্ম নেওয়ার পর আর শ্বাস প্রশ্বাস নেয়নি।

ডাক্তার নাসিফা কবির আরও জানান, সন্তান প্রসবের পর রোগীর শারীরিক অবস্থা দুর্বল হওয়ায় প্রচুর রক্তক্ষরণ দেখা দেয়। তখন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে রাজশাহী নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

হাসপাতালটির নামকরণে স্পেশালাইজড শব্দটি যোগ করার কারণ জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাক্তার নাফিসা কবির জানান, হাসপাতালের নাম করণে স্পেশালাইজড শব্দটি যুক্ত করার আলাদা কোন কারণ নেই। হাসপাতালের নাম দেওয়ার প্রয়োজন তাই দিয়েছি। স্পেশালাইজড নামের কারণে রোগি সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার কোন কারণ নেই। এখানে বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বিশেষ বিশেষ দিনে রোগি দেখছেন।

এ ব্যাপারে জানতে পাবনা সিভিল সার্জেন্ট ডাক্তার শহিদুল্লাহ দেওয়ান জানান, এই বিষয়ে নবজাতকের অভিভাবকদের পক্ষ থেকে করা কোন অভিযোগ হাতে পাননি। অভিযোগ পেলে কমিটি গঠন করে তদন্ত করে প্রমান পেলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়ে ইমারত আলী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়ে গেছেন। অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহনের জন্য ইমারত আলীকে থানায় আসার জন্য বারবার ডাকা হলেও অজ্ঞাত কারণে তিনি থানায় আসছেন না। তারপরও এসআই আব্দুল হালিমকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঈশ্বরদীর জমজম ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশিত সময় ১০:১০:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ মার্চ ২০২৪



পাবনার ঈশ্বরদীতে জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসকের সিদ্ধান্তহীনতা ও অবহেলায় এক নবজাতকের (ছেলে) মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর ঘটনায় পাবনা সিভিল সার্জন ও থানায় অভিযোগ দায়ের করে প্রতিকার না পাওয়ার শংকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিমাংসার পথে হাঠছেন অভিযোগকারী।

সোমবার ১১মার্চ বিকেলে মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানায় অভিযোগকারী নবজাতকের নানা ইমারত আলী ও নানী।

জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসকের সিদ্ধান্তহীনতা ও অবহেলায় এক নবজাতকের (ছেলে) মৃত্যুর ঘটনায় টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে। কারন এর আগেও বহুবার ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় ঈশ্বরদীর বিভিন্ন ক্লিনিকে নবজাতকসহ প্রসুতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

ভুক্তভোগিদের সুত্রে জানা যায়, জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতাল নামেই শুধু স্পেশালাইজড হাসপাতাল। এখানে তেমন কোন স্পেশালাইজড চিকিৎসক নেই। সেবাও নেই। শুধু মাত্র ডেলিভারি চিকিৎসাই রয়েছে। আর নামের কারনেই রোগী ও তার অভিভাবকরা সঠিক সেবা নিতে এসে প্রতারিত হচ্ছেন। কিন্তু বিষয়টি দেখার কেউ নেই।

থানায় দায়ের করা অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ৪ মার্চ সকালে ঈশ্বরদীর সলিমপুর ইউনিয়নের চরমিরকামারি গ্রামের ইমারত আলীর মেয়ে ইসরাত জাহান সিন্তা প্রসব বেদনা নিয়ে পূর্ব থেকে চিকিৎসা দেওয়া ডাক্তার নাফিসা কবিরের পরামর্শে তার মালিকানাধীন জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে একবার নরমাল ডেলিভারি আরেকবার অপারেশন করার মাধ্যমে সন্তান ডেলিভারী করার কথা বলে প্রসুতির অভিভাবকদের বিভ্রান্তিতে ফেলেন ডাক্তার নাফিসা কবির। অবশেষে দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর নরমালে মৃত ছেলে সন্তান প্রসব করান ডাক্তার নাফিসা কবির। এরপর প্রসুতির অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এতে রোগির অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রসুতিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পুর্ব থেকে ডাক্তার নাফিসা কবিরের চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রসুতি এবং বাচ্চার অবস্থা ভাল ছিল মর্মে জানিয়েছিলেন ডাক্তার।

প্রসুতির অভিভাবকরা জানান, ইসরাত জাহান সিন্তা জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতালের ভর্তির পর থেকে চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা প্রদানে চরম অবহেলা করেন। মৃত বাচ্চা প্রসব ও প্রসুতির অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে রোগির অবস্থায় আশংকাজনক হওয়ায় রামেক-এ নেওয়ার পরামর্শ দেন। তখন তাৎক্ষণিক ভাবে প্রসুতিকে প্রথমে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রসুতির অবস্থার আরও অবনতি হলে রামেক-এ ভর্তি করা হয়। একই সঙ্গে রোগীর শরীরে ১৮ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। তার জীবন এখনও আশংকাজনক।

নবজাতকের নানা ইমারত আলী ও নানী জানান, এই বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবীতে রোববার থানায় ও পাবনা সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু প্রতিকার পাবো না এমনকি সন্তানও ফিরে পাবো না। আবার মেয়ে ইসরাত জাহান সিন্তার যে ক্ষতি হয়েছে তাও পূরণ হবে না। তাই অভিযোগের দিকে না তাকিয়ে এক সাংবাদিকের মাধ্যমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিমাংসা করে নেওয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ডাক্তার নাফিসা কবির জানান, চিকিৎসা প্রদানে তাদের কোনো অবহেলা ছিল না। বাচ্চার পজিশন ভাল ছিল। প্রচুর পরিমানে প্রসব বেদনা ছিল। এই কারনে নরমাল ডেলিভারি করা হয়েছে। কিন্তু জন্মগত সমস্যা নবজাতকটি জন্ম নেওয়ার পর আর শ্বাস প্রশ্বাস নেয়নি।

ডাক্তার নাসিফা কবির আরও জানান, সন্তান প্রসবের পর রোগীর শারীরিক অবস্থা দুর্বল হওয়ায় প্রচুর রক্তক্ষরণ দেখা দেয়। তখন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে রাজশাহী নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

হাসপাতালটির নামকরণে স্পেশালাইজড শব্দটি যোগ করার কারণ জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাক্তার নাফিসা কবির জানান, হাসপাতালের নাম করণে স্পেশালাইজড শব্দটি যুক্ত করার আলাদা কোন কারণ নেই। হাসপাতালের নাম দেওয়ার প্রয়োজন তাই দিয়েছি। স্পেশালাইজড নামের কারণে রোগি সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার কোন কারণ নেই। এখানে বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বিশেষ বিশেষ দিনে রোগি দেখছেন।

এ ব্যাপারে জানতে পাবনা সিভিল সার্জেন্ট ডাক্তার শহিদুল্লাহ দেওয়ান জানান, এই বিষয়ে নবজাতকের অভিভাবকদের পক্ষ থেকে করা কোন অভিযোগ হাতে পাননি। অভিযোগ পেলে কমিটি গঠন করে তদন্ত করে প্রমান পেলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়ে ইমারত আলী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়ে গেছেন। অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহনের জন্য ইমারত আলীকে থানায় আসার জন্য বারবার ডাকা হলেও অজ্ঞাত কারণে তিনি থানায় আসছেন না। তারপরও এসআই আব্দুল হালিমকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।