ভাঙ্গুড়ায় সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকের পা ভেঙে দিল সন্ত্রাসীরা
- প্রকাশিত সময় ০২:৫০:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪
- / 114
নকল দুধ তৈরির সংবাদ প্রকাশের জেরে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দৈনিক খোলা কাগজের প্রতিনিধি মানিক হোসেন নামের এক সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে নকল দুগ্ধ ব্যবসায়ীদের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা।
মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার পুঁইবিল গ্রামে এই মারধরের ঘটনা ঘটে।
আহত মানিক পাবনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মারধরের সময় সাংবাদিক মানিকের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও মোবাইল কেড়ে নেয় সন্ত্রাসীরা।
আহত সাংবাদিক মানিক হোসেন ভাঙ্গুড়া প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ ঘটনায় ওই সাংবাদিকের পিতা বীরমুক্তিযোদ্ধা বাদী হয়ে সন্ধ্যার রাতেই ভাঙ্গুড়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
জানা যায়, ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চক লক্ষীকোল গ্রামের দুগ্ধ ব্যবসায়ী রাজীব আহমেদ এবং কৈডাঙ্গা গ্রামের আবুল বাশার দীর্ঘদিন ধরে নকল দুধ তৈরির করে ভাঙ্গুড়াসহ বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করে আসছিলেন।
এ নিয়ে কিছুদিন আগে মানিক হোসেনসহ কয়েকজন সাংবাদিক নকল দুধ তৈরির ভিডিও ধারণ করে। এসব ভিডিও উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনকে দেখালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মতবিনিময় সভায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও সুশীল সমাজের বক্তারা এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন। পরে এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজিব আহমেদ ও আবুল বাশারের নেতৃত্বে বায়েজিদ, রাজিব ও মাহাতাব সহ কয়েকজন তার কৈডাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে গিয়ে সাংবাদিক মানিক হোসেনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসেন। এর কয়েকদিন পরই মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে রাজিব আহমেদ ও আবুল বাশারের নেতৃত্বে বায়েজিদ, রাজিব ও মাহাতাব সহ দশ বারো জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী মঙ্গলবার সকালে পুইবিল সড়কে মানিককে একা পেয়ে বেধড়ক পিটিয়ে পা ভেঙে দেয় এবং সাংবাদ সংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত মোটর সাইকেল, মোবাইল ফোনসহ নগদ টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়।
পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মানিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। অবস্থা মুমূর্ষ হওয়ায় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মানিক হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাবনা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
আহত সাংবাদিক মানিক বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই নকল দুধ তৈরীর ব্যবসায়ীরা বাড়িতে এসে কয়েকদিন হুমকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় আমাকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে এবং সেই পেটানোর ভিডিও করেছে তারা। আমার মোটরসাইকেল ও মোবাইল কেড়ে নিয়েছে তারা। আমি আমার পরিবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ইকরামুন নাহার শেলী বলেন, এক্সরে রির্পোটে দেখা যায় মানিকের পায়ের হার ডিসপ্লেস হয়ে গেছে। এর চিকিৎসা ভাঙ্গুড়ায় সম্ভব নয়। তাই পাবনা পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গুড়া থানার ওসি নাজমুল হক বলেন, ঘটনা শোনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠনো হয়েছিল। ওই ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।