ঢাকা ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

গর্ভাবস্থায় শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করে রমরমা ব্যবসা

সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত সময় ০৮:২৭:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • / 153



এবছর ২৫ শে ফেব্রুয়ারি মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না মর্মে রায় দেয় বাংলাদেশের উচ্চ আদালত।

এই রায়ের পর থেকেই দেশের সব হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলো মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা বন্ধ করে দিয়েছে।

এই নিষেধাজ্ঞার সুযোগ নিয়েছে অর্থলোভী কিছু বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

এমনই অভিযোগ উঠেছে পাবনা সাঁথিয়ার আলট্রা মর্ডান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডাক্তার আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে।

গর্ভাবস্থায় শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর।

ভুক্তভোগী এবং এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গর্ভবর্তীদের আল্ট্রাসনোগ্রাম করে সালাম ডাক্তার নিজের ইচ্ছাতেই বলে দেন ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে।

আর এতেই সৃষ্টি হয় সমস্যার। যাদের ছেলে অথবা মেয়ের চাহিদায় আলট্রা করে, তার উল্টো ধরা পরলেই তারা বেশির ভাগই গর্ভপাত করে বাচ্চা নষ্টের সিদ্ধান্ত নেয়।

গর্ভবতী মহিলা বাচ্চা নষ্ট না করতে চাইলে মারপিটসহ বিবাহ বিচ্ছেদের মতো ঘটনাও ঘটে।

মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ডাক্তার আব্দুস সালামের বিচার দাবী করেন ভুক্তভোগীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গর্ভবতী এক মহিলা বলেন, আমার স্বামীর ইচ্ছায় গত ৩ এপ্রিল আলট্রা মর্ডান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডাক্তার আব্দুস সালামের কাছে যাই। কি বাচ্চা হবে জানতে চাওয়ার আগেই ডাক্তার সাহেব বলে দিলো আপনার মেয়ে হবে। এ কথা শোনার পর থেকে আমার স্বামী বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমার প্রথম বাবুও মেয়ে হবে জানতে পেরে বাপের বাড়িতে পাঠিয়েছিল। বাপ মারা যাওয়ায় এবার ভাইয়ের বাড়িতে পাঠিয়েছে। ভাই অতি গরীব, তার পক্ষে সিজার করার মত টাকাও নেই। এখন আমি দুঃশ্চিন্তার মধ্যে আছি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ডাক্তার আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের কাছে অফিসিয়ালি কোন কাগজপত্র আসেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং পত্রপত্রিকায় জানতে পারছি। তবে এরকম কোন ঘটনা ঘটে নাই। আমরা ছেলে মেয়ে কি হবে মুখেও বলিনা এবং লিখিতও দেইনা কোন সময়ই।

মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশের তথ্য আছে সাংবাদিকদের কাছে জানালে তিনি বলেন, আপনি আমার ভাই, এখন আপনি যদি জানতে চান ছেলে নাকি মেয়ে হবে তখন তো বলতেই হয়।

এ বিষয়ে সদ্য বিদায়ী সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সুজয় কুমার সাহা বলেন, হাইকোর্টের রায় অমান্য করে মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করলে এটা দন্ড পাওয়ার যোগ্য অপরাধ।

এ বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আব্দুল বাতেন বলেন, মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় বলার কথা না। আমি নতুন আসছি। ওনার সাথে কথা বলে দেখবো।

উল্লেখ্য, আদালতের এই রায়কে যুগান্তকারী বলছেন এর রিট আবেদনকারী আইনজীবি ইশরাত হাসান। এ রায় অমান্য করলে আদালত অবমাননার শাস্তি হবে বলে জানান ইশরাত হাসান। আর যে কেউ চাইলে এ রায় ধরে আইনগত ব্যবস্থাও নিতে পারবে বলে জানান তিনি।

গর্ভাবস্থায় শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করে রমরমা ব্যবসা

প্রকাশিত সময় ০৮:২৭:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪



এবছর ২৫ শে ফেব্রুয়ারি মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না মর্মে রায় দেয় বাংলাদেশের উচ্চ আদালত।

এই রায়ের পর থেকেই দেশের সব হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলো মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা বন্ধ করে দিয়েছে।

এই নিষেধাজ্ঞার সুযোগ নিয়েছে অর্থলোভী কিছু বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

এমনই অভিযোগ উঠেছে পাবনা সাঁথিয়ার আলট্রা মর্ডান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডাক্তার আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে।

গর্ভাবস্থায় শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর।

ভুক্তভোগী এবং এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গর্ভবর্তীদের আল্ট্রাসনোগ্রাম করে সালাম ডাক্তার নিজের ইচ্ছাতেই বলে দেন ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে।

আর এতেই সৃষ্টি হয় সমস্যার। যাদের ছেলে অথবা মেয়ের চাহিদায় আলট্রা করে, তার উল্টো ধরা পরলেই তারা বেশির ভাগই গর্ভপাত করে বাচ্চা নষ্টের সিদ্ধান্ত নেয়।

গর্ভবতী মহিলা বাচ্চা নষ্ট না করতে চাইলে মারপিটসহ বিবাহ বিচ্ছেদের মতো ঘটনাও ঘটে।

মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ডাক্তার আব্দুস সালামের বিচার দাবী করেন ভুক্তভোগীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গর্ভবতী এক মহিলা বলেন, আমার স্বামীর ইচ্ছায় গত ৩ এপ্রিল আলট্রা মর্ডান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডাক্তার আব্দুস সালামের কাছে যাই। কি বাচ্চা হবে জানতে চাওয়ার আগেই ডাক্তার সাহেব বলে দিলো আপনার মেয়ে হবে। এ কথা শোনার পর থেকে আমার স্বামী বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমার প্রথম বাবুও মেয়ে হবে জানতে পেরে বাপের বাড়িতে পাঠিয়েছিল। বাপ মারা যাওয়ায় এবার ভাইয়ের বাড়িতে পাঠিয়েছে। ভাই অতি গরীব, তার পক্ষে সিজার করার মত টাকাও নেই। এখন আমি দুঃশ্চিন্তার মধ্যে আছি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ডাক্তার আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের কাছে অফিসিয়ালি কোন কাগজপত্র আসেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং পত্রপত্রিকায় জানতে পারছি। তবে এরকম কোন ঘটনা ঘটে নাই। আমরা ছেলে মেয়ে কি হবে মুখেও বলিনা এবং লিখিতও দেইনা কোন সময়ই।

মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশের তথ্য আছে সাংবাদিকদের কাছে জানালে তিনি বলেন, আপনি আমার ভাই, এখন আপনি যদি জানতে চান ছেলে নাকি মেয়ে হবে তখন তো বলতেই হয়।

এ বিষয়ে সদ্য বিদায়ী সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সুজয় কুমার সাহা বলেন, হাইকোর্টের রায় অমান্য করে মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করলে এটা দন্ড পাওয়ার যোগ্য অপরাধ।

এ বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আব্দুল বাতেন বলেন, মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় বলার কথা না। আমি নতুন আসছি। ওনার সাথে কথা বলে দেখবো।

উল্লেখ্য, আদালতের এই রায়কে যুগান্তকারী বলছেন এর রিট আবেদনকারী আইনজীবি ইশরাত হাসান। এ রায় অমান্য করলে আদালত অবমাননার শাস্তি হবে বলে জানান ইশরাত হাসান। আর যে কেউ চাইলে এ রায় ধরে আইনগত ব্যবস্থাও নিতে পারবে বলে জানান তিনি।