অপমান সইতে না পেরে নব দম্পতির বিষপান
- প্রকাশিত সময় ১২:৪৪:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ জুলাই ২০২৪
- / 140
পাবনার ঈশ্বরদীতে গৃহবধুর দূরসম্পর্কের এক নানীর কটুক্তিমূলক কথায় অপমান সইতে না পেরে রিয়া খাতুন (১৯) ও সাজেদুল ইসলাম (২১) নামের এক দম্পতি বিষপান করেছে।
বিষপানের ফলে গৃহবধু রিয়া খাতুন মৃত্যু বরণ করেছে এবং স্বামী সাজেদুল ইসলাম রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
রবিবার ৩০ জুন সকালে হৃদয়বিদারক এই ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের চরগড়গড়ি ফটিক মোড়ের আজতব প্রামানিক বাড়িতে।
সাজেদুলের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, একমাস পুর্বে রিয়া ও সাজেদুল প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে করে। রিয়ার পরিবার বিয়ে মেনে না নিলেও সাজেদুলের পরিবার এই বিয়ে মেনে নেয়। সাজেদুলের বাড়িতে শ্বশুড়, শ্বাশুড়ি, ননদসহ আত্মীয়দের নিয়ে সুখেই ছিলো রিয়া। কিন্তু রিয়ার দূর সম্পর্কের নানী (চাচির মা) রিয়ার শ্বশুড় বাড়িতে গিয়ে রিয়াকে নানা রকম কটুক্তিমূলক কথা বলে এবং থুথু ফেলে তাদের ভালবাসার বিয়ের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেন। এতে চরমভাবে অপমানিত হয়ে সাজেদুল ও রিয়া পরিবারের লোকজনের চোখের আড়ালে নিজ ঘরে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
পরে বাড়ির লোকজন টের পেয়ে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) ভর্তি করে। সেখানেই রিয়ার মৃত্যু হয়। আর জীবন শংকটে অচেতন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে স্বামী সাজেদুল।
নিহত রিয়া ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের আজিজলতলা এলাকার লেরু মোল্লার মেয়ে। আর সাজেদুল একই ইউনিয়নের চরগড়গড়ি এলাকার আজতব প্রামানিকের ছেলে।
রিয়ার স্বামীর বাড়ির প্রতিবেশিরা জানান, রিয়া ও সাজেদুল প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে করে। রিয়ার পরিবার এই বিয়ে মেনে নেয়নি। রিয়ার বাবার পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগও ছিল না। কিন্তু সুখেই সংসার করছিল তারা। ঘটনার দিন সকালে রিয়ার এক নানী (চাচীর মা অর্থাৎ চাচা চেরু মোল্লার শ্বাশুড়ি) প্রতিবেশি হওয়ার সুযোগে রিয়ার বাড়িতে আসেন। এই সময় রিয়ার শ্বশুড়, শ্বাশুড়ি, ননদ ও স্বামী কেউ বাড়িতে ছিলেন না। এই সময় ভানু বেগম বিয়ের বিষয়ে রিয়াকে নানা রকম কটুক্তি করে। এবং পালিয়ে বিয়ে করায় মুখের উপর থুথু ফেলে ঘৃণা প্রকাশ করে চলেন যান। কিছুক্ষণ পরে সাজেদুল বাড়িতে ফিরে আসে। রিয়া তখন বিষয়টি সাজেদুলকে জানিয়ে কান্না শুরু করে। এতে তারা অপমানিত বোধ করে আবেগতাড়িত হয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সাজেদুল দোকান থেকে ঘাস মারা দুই বোতল বিষ কিনে এনে উভয়ই সে বিষ পান করে।
রিয়ার শ্বশুড় আজতব প্রামানিক জানান, ঘটনার দিন সকালে তিনি রিয়ার দেওয়া ভাত খেয়ে মাঠে কাজে যান। এই সময় রিয়ার ননদ অসুস্থ্য হওয়ায় তাকে নিয়ে ডাক্তারের নিকট যান তার শ্বাশুড়ি। এই সুযোগে রিয়া ও সাজেদুল বিষপান করে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। তাদের রাজশাহী মেডিক্যালে ভর্তি করা হলে রিয়া মারা যায়। সাজেদুলের অবস্থাও ভাল না।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, নবদম্পতি বিষপান করেছে। এর মধ্যে নববধু রিয়া রামেক-এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। বিষপানের কারণ জানতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।