ঈশ্বরদীতে প্রাইভেটকারে ঘুরতে গিয়ে ৫ বন্ধু নিহত
- প্রকাশিত সময় ০৩:৪২:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪
- / 100
প্রাইভেটকার চালক গ্রামের অন্য ৬ বন্ধুকে নিয়ে প্রাইভেটকার যোগে ঘুরতে বের হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে ৫ বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে। অন্য ২ জন আশংকাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বৃহস্পতিবার ৪ জুলাই রাত সাড়ে ৮ টার দিকে পাবনা-ঈশ্বরদী মহাসড়কের দাশুড়িয়ার পাবনা সুগার মিল গেটের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের আযমপুর ডিগ্রী পাড়ার মৃত মাসুম হোসেনের ছেলে সিফাত ইসলাম সিয়াম (১৬), একই এলাকার ইলিয়াস হোসেনের ছেলে শিশির মাহমুদ (১৫), কুদ্দুস প্রামানিকের ছেলে জিহাদ হোসেন (১৪), আনোয়ার হোসেনের ছেলে বিজয় হোসেন (১৮), সলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী এলাকার ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে শাওন (১৪)।
আর আহতরা হলেন, একই এলাকার সুমন খন্দকারের ছেলে নাইম হোসেন (১৪) ও জাপান খন্দকারের ছেলে আবু সাঈদ (১৭)।
নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে প্রতিবেশীরা জানান, প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেনের ছেলে বিজয় ঢাকায় একটি কোম্পানিতে প্রাইভেটকার চালক হিসেবে চাকরি করে। ঈদের পর ছুটিতে বাড়িতে এসেছে বন্ধুদের নিয়ে প্রাইভেকার চালিয়ে বিজয় ঘুরতে বের হয়। ৬ বন্ধু মিলে অপর বন্ধু সলিমপুরের ভাইড়মারি গ্রামের শাওনকে গাড়িতে আনতে যায়। তাকে নিয়েই আযমপুরের ডিগ্রী পাড়ায় ফেরার সময় প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাবনা সুগার মিলের সামনে রাস্তার একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে এ দুর্ঘটনার শিকার হয়।
ঈশ্বরদী ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের ইনচার্জ মীর আমিরুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দুর্ঘটনাকবলিত প্রাইভেটকারটিকে কেটে ভিতর থেকে তাদের বের করা হয়। ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে আরও দুইজন মারা যায়। দ্রুত গতির কারণেই প্রাইভেটকারটির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে থাকা গাছের সঙ্গে ধাক্কা দেয়। এতে প্রাইভেটকারটি দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে কারের ভেতরে সবাই আটকে পড়ে।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক (আরএমও) ডাক্তার শফিকুল ইসলাম শামীম জানান, দুর্ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ২ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
পাকশী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ বেলাল হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, প্রাইভেটকারটি ঈশ্বরদী থেকে পাবনার দিকে যাচ্ছিল। অনিয়ন্ত্রিত গতিতে চলার কারনেই প্রাইভেটকারটি চালক নিয়ন্ত্রন হারিয়ে এই দুর্ঘটনাটি ঘটিয়েছে। দুর্ঘটনায় চালকসহ তার ৪ বন্ধু নিহত হয়েছে। অপর ২ বন্ধু গুরুতর আহত হয়েছে। নিহতের স্বজনের লিখিত দাবীতে মরদেহ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাস ও ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানিয়েছেন।
দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বকুল সরদার জানান, দুর্ঘটনায় তার ইউনিয়নের একই গ্রামের ৪ জন ও সলিমপুর ইউনিয়নের একজনের মৃত্যু হয়েছে। পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের আহাজারি থামানো যাচ্ছে না।