ঢাকা ০৪:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

চাটমোহরে ভাইবোনের দ্বন্দে বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটের অভিযোগ

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত সময় ০৭:২৪:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 28



পাবনার চাটমোহরে টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মোঃ আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তির বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, স্বর্নালঙ্কার ছিনতাই ও গরু লুটের অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের খৈরাশ গ্রামে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

ভুক্তভোগী থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।

থানায় লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, বড় বোন আনোয়ারা খাতুন তার স্বামীর মৃত্যুর পর ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রয়ের ১২ লাখ টাকা পান। সেই টাকা ছোট ভাই আলাউদ্দিনকে দিয়ে তার বাড়িতে বসবাস করছিলেন। এক পর্যায়ে আনোয়ারা খাতুন তার টাকা দিয়ে বসতঘর নির্মাণের জন্য ছোট ভাই আলাউদ্দিনকে বলেন। সেই মোতাবেক আনোয়ারা খাতুনের টাকা দিয়ে একটা বসতঘর নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেন তারা। প্রায় ৫ বছর একসাথে ভাইবোন বসবাস করার পর ১৫ দিন আগে হঠাৎ করেই ভাই আলাউদ্দিনের বাড়িতে থাকবেন না বলে তার দেয়া টাকা ফেরত চান বোন আনোয়ারা খাতুন। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধক রাখা জমি, গরুসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দিয়ে বোনের টাকা পরিশোধ করেন আলাউদ্দিন। তারপরও টাকা শোধ হয়নি বলে আরো টাকা দাবি করেন আনোয়ারা।

আলাউদ্দিনের অভিযোগ, এরই এক পর্যায়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাত দশটার দিকে আনোয়ারা খাতুন তার ভাগ্নে মজনু হোসেন (৪২) ও ভাতিজা আলহাজ হোসেন (৪০) এর নেতৃত্বে কিছু লোক আলাউদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। এ সময় তারা বাড়ির জানালার গ্লাস ভাঙচুর করে, বারান্দায় থাকা ধানের বস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় হামলাকারীদের বাঁধা দিতে গেলে আলাউদ্দিন ও তার স্ত্রী বিলকিছ খাতুনকে মারধর ও তার গলায় থাকা স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নেয়। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আগুন নেভায়, হামলাকারীরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।

ঘটনার পরপরই ট্রিপল নাইনে কল দেন ভুক্তভোগী আলাউদ্দিন। পরে ওই রাতেই চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেদুয়ানুল হালিম পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

পরদিন ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে আলাউদ্দিন বাদি হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে চাটমোহর থানায় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। যেদিন অভিযোগ দিতে যান সেদিন আলাউদ্দিনের গোয়াল ঘর থেকে জোরপূর্বক তার দু’টি গরু লুট করে নিয়ে যান মজনু ও আলহাজ গং।

আলাউদ্দিনের দাবি, আমার বোন আমাকে টাকা দিয়েছে দেখে শরীক আত্মীয়-স্বজনদের হিংসা শুরু হয়। তারাই টাকা লোভে আমার বোনকে নানাভাবে উসকে দিয়ে আমাদের মধ্যে বিরোধ তৈরী করেছে। আমি থানায় অভিযোগ দিলেও সুরাহা হয়নি। আমার যা হবার হয়েছে। কিন্তু আমার প্রায় আড়াই লাখ টাকা মূল্যের গরু দু’টি ফেরত চাই।

আলাউদ্দিনের বোন আনোয়ার খাতুন বলেন, আমি ১৭ লাখ টাকা দিয়েছিলাম ভাইয়ের কাছে। ঘর করার সময় বলছিলাম কিছু টাকা দেবোনে। এখন দেখি সে আমার সব টাকা দিয়ে ঘর করছে। সেই টাকা ফেরত চাওয়ার পর থেকে বিরোধ শুরু হয়। পরে আমাকে জমি ও গরু দিয়েছিল। পরে আবার সেই গরু নিয়ে যায় আলাউদ্দিন। ওর বাড়িতে হামলা ভাঙচুর কিছুই করা হয়নি। ওগুলো সে নিজেই করছে। আর আমার গরু আমি লোকজন দিয়ে ওর বাড়ি থেকে নিয়ে আসছি। এজন্য আমিও থানায় অভিযোগ দিয়েছি।

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেদুয়ানুল হালিম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি এবং ভুক্তভোগীকে আইনের আশ্রয় নেবার পরামর্শ দিয়েছি। তারপরের বিষয়টুকু পুলিশ দেখবে।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম বলেন, থানায় নতুন যোগদান করেছি। সব অভিযোগ এখনও দেখে শেষ করতে পারিনি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো এবং আইনগত প্রক্রিয়া শুরু করেবো।

এই রকম আরও টপিক

চাটমোহরে ভাইবোনের দ্বন্দে বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটের অভিযোগ

প্রকাশিত সময় ০৭:২৪:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪



পাবনার চাটমোহরে টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মোঃ আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তির বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, স্বর্নালঙ্কার ছিনতাই ও গরু লুটের অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের খৈরাশ গ্রামে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

ভুক্তভোগী থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।

থানায় লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, বড় বোন আনোয়ারা খাতুন তার স্বামীর মৃত্যুর পর ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রয়ের ১২ লাখ টাকা পান। সেই টাকা ছোট ভাই আলাউদ্দিনকে দিয়ে তার বাড়িতে বসবাস করছিলেন। এক পর্যায়ে আনোয়ারা খাতুন তার টাকা দিয়ে বসতঘর নির্মাণের জন্য ছোট ভাই আলাউদ্দিনকে বলেন। সেই মোতাবেক আনোয়ারা খাতুনের টাকা দিয়ে একটা বসতঘর নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেন তারা। প্রায় ৫ বছর একসাথে ভাইবোন বসবাস করার পর ১৫ দিন আগে হঠাৎ করেই ভাই আলাউদ্দিনের বাড়িতে থাকবেন না বলে তার দেয়া টাকা ফেরত চান বোন আনোয়ারা খাতুন। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধক রাখা জমি, গরুসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দিয়ে বোনের টাকা পরিশোধ করেন আলাউদ্দিন। তারপরও টাকা শোধ হয়নি বলে আরো টাকা দাবি করেন আনোয়ারা।

আলাউদ্দিনের অভিযোগ, এরই এক পর্যায়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাত দশটার দিকে আনোয়ারা খাতুন তার ভাগ্নে মজনু হোসেন (৪২) ও ভাতিজা আলহাজ হোসেন (৪০) এর নেতৃত্বে কিছু লোক আলাউদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। এ সময় তারা বাড়ির জানালার গ্লাস ভাঙচুর করে, বারান্দায় থাকা ধানের বস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় হামলাকারীদের বাঁধা দিতে গেলে আলাউদ্দিন ও তার স্ত্রী বিলকিছ খাতুনকে মারধর ও তার গলায় থাকা স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নেয়। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আগুন নেভায়, হামলাকারীরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।

ঘটনার পরপরই ট্রিপল নাইনে কল দেন ভুক্তভোগী আলাউদ্দিন। পরে ওই রাতেই চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেদুয়ানুল হালিম পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

পরদিন ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে আলাউদ্দিন বাদি হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে চাটমোহর থানায় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। যেদিন অভিযোগ দিতে যান সেদিন আলাউদ্দিনের গোয়াল ঘর থেকে জোরপূর্বক তার দু’টি গরু লুট করে নিয়ে যান মজনু ও আলহাজ গং।

আলাউদ্দিনের দাবি, আমার বোন আমাকে টাকা দিয়েছে দেখে শরীক আত্মীয়-স্বজনদের হিংসা শুরু হয়। তারাই টাকা লোভে আমার বোনকে নানাভাবে উসকে দিয়ে আমাদের মধ্যে বিরোধ তৈরী করেছে। আমি থানায় অভিযোগ দিলেও সুরাহা হয়নি। আমার যা হবার হয়েছে। কিন্তু আমার প্রায় আড়াই লাখ টাকা মূল্যের গরু দু’টি ফেরত চাই।

আলাউদ্দিনের বোন আনোয়ার খাতুন বলেন, আমি ১৭ লাখ টাকা দিয়েছিলাম ভাইয়ের কাছে। ঘর করার সময় বলছিলাম কিছু টাকা দেবোনে। এখন দেখি সে আমার সব টাকা দিয়ে ঘর করছে। সেই টাকা ফেরত চাওয়ার পর থেকে বিরোধ শুরু হয়। পরে আমাকে জমি ও গরু দিয়েছিল। পরে আবার সেই গরু নিয়ে যায় আলাউদ্দিন। ওর বাড়িতে হামলা ভাঙচুর কিছুই করা হয়নি। ওগুলো সে নিজেই করছে। আর আমার গরু আমি লোকজন দিয়ে ওর বাড়ি থেকে নিয়ে আসছি। এজন্য আমিও থানায় অভিযোগ দিয়েছি।

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেদুয়ানুল হালিম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি এবং ভুক্তভোগীকে আইনের আশ্রয় নেবার পরামর্শ দিয়েছি। তারপরের বিষয়টুকু পুলিশ দেখবে।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম বলেন, থানায় নতুন যোগদান করেছি। সব অভিযোগ এখনও দেখে শেষ করতে পারিনি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো এবং আইনগত প্রক্রিয়া শুরু করেবো।