ঈশ্বরদীতে খুলনা-ঈশ্বরদী-ঢাকা যাত্রাপথে চলাচলকারী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত বাতিল ও সুন্দরবন-বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন পুনরায় ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন হয়ে চলাচলের দাবিতে ট্রেন আটকে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ঈশ্বরদীর ছাত্র-জনতা।

বৃহস্পতিবার ৩ অক্টোবর দুপুর দেড়টার দিকে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে আপমর ছাত্র-জনতার ব্যানারে এ মানবন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়।

এসময় বিক্ষোভকারীরা ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুপুরে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে পৌঁছালে ট্রেন অবরোধ করে স্টেশন চত্বরে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত বাতিল চেয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হুশিয়ারি দেন।

এসময় ট্রেনটি প্রায় ৩০ মিনিট আটকে রেখে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি নেতা এস এম ফজলুর রহমান, ইসলাম হোসেন জুয়েল, আনোয়ার হোসেন জনি, প্রভাষক রাজিবুল আলম ইভান, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আহসান হাবীব জিতু, ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ, ব্যবসায়ী সাইফ হাসান সেলিম, সাংবাদিক সেলিম সরদার, ছাত্র প্রতিনিধি তানজিদুর জামান (দিহান), মেহরাব মাহিব প্রমুখ।

সমাবেশ পরিচালনা করেন ব্যবসায়ী মাসুম পারভেজ কল্লোল।

পরে ট্রেন ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার পর যাত্রাপথ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের সুপারিনটেন্টডেন্ট মহিউল ইসলামের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন বিক্ষোভকারী ছাত্র-জনতা।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন হয়ে চলাচলকারী সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন গত বছর নভেম্বর মাসে যাত্রাপথ পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করছে। এরপর একমাত্র চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন হয়ে খুলনা-ঢাকা যাত্রাপথে চলাচল করছে। এখন শুনছি এ ট্রেনটি যাত্রাপথ পরিবর্তন করে খুলনা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা চলাচল করবে। এ ট্রেনটি যাত্রাপথ পরিবর্তন করলে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন থেকে ঢাকাগামী আর কোন ট্রেন থাকবে না। ঈশ্বরদীর মানুষজন ঢাকা যেতে হলে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন হয়ে ঢাকা যেতে হবে। শহর থেকে বাইপাস স্টেশন তিন কিলোমিটার দূরে এবং রাতে চলাচলের নিরাপত্তা না থাকায় বিশেষ করে নারী যাত্রীরা বাইপাস স্টেশন হয়ে চলাচল করতে পারে না। চিত্রা ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তন করা হলে ঈশ্বরদীবাসীর জন্য ঢাকা-খুলনা যাত্রাপথে চলাচল খুবই কষ্টকর হয়ে যাবে। তাই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে চিত্রা ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তনের সীদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।

এছাড়াও ছাত্ররা ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, যদি চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তনের সীদ্ধান্ত বাতিল করা না হয়, তাহলে আমরা পশ্চিমাঞ্চল রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে পরিবহণ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ফারহান মাহমুদ বলেন, চিত্রা ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের কোন নিদের্শনা আমাদের কাছে আসেনি। এ বিষয়ে আমাদের রেল মন্ত্রালয় থেকে এখনো পর্যন্ত লিখিত বা মৌখিকভাবে কোন কিছু জানানো হয়নি।

রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আব্দুল আউয়াল ভূঁইয়া জানান, চিত্রা ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তনের কোন সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। আগামী নভেম্বর থেকে খুলনা-যশোর থেকে ঢাকাগামী ট্রেন নতুন রেললাইন দিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করতে পারে। সেক্ষেত্রে ওই যাত্রাপথে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে শুনেছি। আমি যতদূর জানি চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন এ যাত্রা পথেই চলাচল করবে। এখনো পর্যন্ত যেহেতু কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই কিছু বলা যাচ্ছে না।