প্রকাশ্য দিবালোকে মায়ের সামনে সন্তানকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা
- প্রকাশিত সময় ০৮:১০:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪
- / 2
পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রকাশ্য দিবালোকে মায়ের সামনে ওয়ালিফ হোসেন মানিক (৩৫) নামের এক যুবলীগ কর্মীকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
সোমবার ১৮ নভেম্বর সকাল আনুমানিক ৮ টার দিকে উপজেলার রূপপুর পাকার মোড়স্থ ইউসুফ পাটোয়ারির গলিতে নিজ বাড়ির পেছনে দুর্বৃত্তদের হামলায় মানিক নিহত হন।
নিহত মানিক উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের রূপপুর মোড় এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে এবং পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টুর ছোট জামাই। তিনি পাকশী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমানে যুবলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
নিহত মানিকের বাবা ইউসুফ আলী ও তার মা জানান, ‘গতকাল আমার ছেলে জেল থেকে যামিনে বের হয়েছে। সোমবার পাবনাতে ওই মামলার হাজিরা ছিল। মানিক সকালে আমার কাছে টাকা চাইলো আদালতে যাওয়ার জন্য। সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় যাবার পরপরই ৮ থেকে ১০ জন পারমানবিকের শ্রমিকের পোশাক পরিহিত অবস্থায় এসে তাকে প্রথমে গুলি করে। তখন মানিক তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ফেলে দৌড়ে বড় আব্বার বাড়ির পেছনে গেলে দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে ও গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।’
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, ‘২০২৩ সালের ১৭ই জুন রাত ১১ টার দিকে উপজেলার লক্ষিকুন্ডা গ্রামে এমপি’র মোড়ে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন ছাত্রলীগ কর্মী তাফসির আহমেদ মনা। সেই মামলায় আসামি ছিলেন পাকশী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমানে যুবলীগ কর্মী ওয়ালিফ হোসেন মানিক। গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে ছিলেন তিনি। ২০ দিন আগে হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর জেল থেকে বের হয়েছেন।’
নিহত মানিকের ফুপু সেলিনা খাতুন জানান, ‘মানিককে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায় টুনটুনি ও তার ভাইয়েরা। পরে পুলিশ টুনটুনির নানা শহিদুল বিশ্বাসের বাড়ি থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে।’
এবিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে সুরাতাল প্রতিবেদন শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনার জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই তথ্য পেয়েছি কারা এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত। তাদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে। আশা করি তাদের দ্রুত গ্রেফতার করতে পারবো।’
মূলত গত বছরে ছাত্রলীগ কর্মী মনে হত্যাকান্ডের জের ধরেই এই হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন নিহতের স্বজন ও পুলিশ।
উল্লেখ্য, ঈশ্বরদী রূপপুর মোড় এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে অভ্যন্তরীণ বিরোধ চলে আসছে। সেই বিরোধের জেরে ২০১৫ সালের ১ জুন বিকেলে রূপপুর মোড় এলাকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে সৌরভ হোসেন টুনটুনি নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীর বাম হাত কেটে নেয় প্রতিপক্ষরা। তারপর থেকেই স্থানীয়ভাবে তার নাম হয়ে যায় হাত কাটা টুনটুনি। সেই ঘটনার পর ২০২৩ সালের ১৭ই জুন রাতে লক্ষীকুন্ডা গ্রামের এমপি’র মোড়ে প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হন সৌরভ হোসেন টুনটুনির ছোট ভাই আরেক ছাত্রলীগ কর্মী তাফসিল আহমেদ মনা।