গভীর রাতে ঈশ্বরদী হাসপাতালের অক্সিজেন প্লান্টের উদ্বোধন
- প্রকাশিত সময় ০২:২৮:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 37
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বতীকালিন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায়) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেছেন, বাইরের অক্সিজেন উৎসের উপর নির্ভরশীলতা কমানো ও রোগীদের আরও ভালো সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল চত্তরে অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের হাসপাতালের ২৯ টি প্লান্টের মধ্যে ২৭ হাসপাতালে এই প্লান্ট নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি দুটি প্লান্ট চলতি বছরের শেষ নাগাদ হস্তান্তর করা হবে। এই প্লান্টগুলোর মাধ্যমে দেশের প্রায় ৮২ লাখেও বেশি মানুষকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে বলে আশাবাদী।
গত মঙ্গলবার ২৪ ডিসেম্বর রাত ১২ টার পরে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পিএসএ অক্সিজেন প্লান্টের উদ্বোধন শেষে ড. সায়েদুর এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, পিএসএ প্লান্টটি স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং মহামারি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমরা এই প্রযুক্তিকে দেশব্যাপী বিস্তৃত করার লক্ষ্য নিয়েছি, যা স্বাস্থ্য অবকাঠামো শক্তিশালী করার একটি টেকসই সমাধান হিসেবে কাজ করবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. সায়েদুর রহমান বলেন, ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শর্যা থেকে ১০০ শর্যায় উন্নীত করার দাবীটি আমাদের দৃষ্টিতে রয়েছে। হাসপাতালের তিন তিলা ভবনকে উর্ধ্বমুখি বাড়ানো সম্ভব হলে অবশ্যই হাসপাতালটি ১০০ শয্যা বিশিষ্ট করায় সমর্থন থাকবে। তবে হাসপাতালটি ১০০ শর্যায় উন্নীত হওয়ার জন্য অবকাঠামোগত সকল দিক ঠিক রয়েছে জানতে পেরেছি। ঈশ্বরদীবাসীর দাবীর বিষয়টি বাস্তবায়নে আমি গুরুত্বসহকারে সমর্থন করবো।
এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বতীকালিন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারীর একান্ত সচিব মো. আবিদুর রহমান স্বাক্ষরিত সরকারী এক আদেশে সফর কর্মসূচিতে বলা হয় অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান অন্যান্য সফর সঙ্গীদের নিয়ে ২৫ ডিসেম্বর (বুধবার) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে পাবনা সার্কিট হাউজ থেকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাবেন। কিন্তু ২৪ ডিসেম্বর গভীর রাতেই ডা. সায়েদুর রহমান অন্যান্য সফর সঙ্গীদের নিয়ে ঈশ্বরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। রাত একটার দিকে ফিতা কেটে অক্সিজেন প্লান্টটি উদ্বোধন করেন।
এসময় পাবনা সিভিল সার্জন ডা. দেওয়ান শহিদুল্লাহ, ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবির কুমার দাশ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. রেজিনুর রহমান, ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম শহীদ,উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আলী এহেসান বিজয়, আমবাগান পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আফজাল হোসেন, এইএনওপিএস প্রকল্পের ব্যবস্থাপক ইনফিয়াজ হায়দার, প্রকল্পের উপ-ব্যবস্থাপক মো. হাসান আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সুত্রে জানা যায়, গ্লোবাল ফান্ড ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফর বাংলাদেশ এর অর্থায়নে দেশের ঈশ্বরদী, কুষ্টিয়া, যশোর, সিরাজগঞ্জ, ফোজদারহাট, গাইবান্দা, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, মানিকগঞ্জ, কুর্মিটলা, বক্ষব্যাধী, চান্দিয়া, মুগদা, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, নারায়নগঞ্জ, গাজিপুর, জামালপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, বরিশাল, সাতক্ষিরা, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন ও কক্সবাজারসহ ২৯ টি হাসপাতালে ১৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে পিএসএ অক্সিজেন প্লান্ট নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি প্লান্টের আনুমানিক খরচ হয়েছে সাড়ে তিন থেকে চার কোটি টাকা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলী এহেসান বিজয় বলেন, দেশের স্বাস্থ্যখাতে মহামারিতে অক্সিজেনের ঘাটতি মোকাবেলা করা সম্ভব হবে। সরকার এই প্রকল্প থেকে অক্সিজেনের খালি সিলিন্ডার রিফিল (পূনরায় ভরতে) করতে পারবে। তাতে খরচ খুবই কম হবে। তবে প্লান্টেিত পুরোপুরি বিদ্যুৎ সংযোগ করা করা সম্ভব হলে গতি আরও বাড়তে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
পাবনা সিভিল সার্জন ডা. দেওয়ান শহীদুল্লাহ বলেন, ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে ৫০ শর্যা থেকে ১০০ শর্যায় উন্নীত করার জন্য সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে পত্র দেওয়া হয়েছে।
২৫ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮ টার কর্মসূচি আগের দিন ২৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে করার বিষয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বতীকালিন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায়) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের সফর সঙ্গী সহকারী একান্ত সচিব মো. সাইফ উদ্দিন সরকার বলেন, অন্য কোন কারণ নেই। ২৪ ডিসেম্বর রাতে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প দেখতে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ঈশ্বরদীতে আসলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অক্সিজেন প্লান্টটি উদ্বোধনের করে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।