ঢাকা ০৬:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

আমলাতন্ত্র, কম বিনিয়োগ ও জবাবদিহিতার অভাবে টেলিটক বিকশিত হচ্ছে না

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০১:৩১:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / 139

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ আমলাতন্ত্র, কম বিনিয়োগ ও জবাবদিহিতার অভাবে টেলিটক বিকশিত হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।

গতকাল ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকই চায় তার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ভালো চলুক। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির লাভের প্রতিযোগিতায় লাগাম টানতেই রাষ্ট্র তার নিজের প্রতিষ্ঠান তৈরি করে।

তাছাড়া আপদকালীন সময় মোকাবেলায় বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সরকার টেলিটকের যাত্রা শুরু করেছিল এ চিন্তা থেকেই। রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক চায় তার অর্থ রাষ্ট্রেই থেকে যাক।

বর্তমানে আমরা ৩.৮ বিলিয়ন ডলার কথা বলতে ব্যয় করছি। যার ৯০ ভাগই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, জিডিপি’তে টেলিযোগাযোগ খাতের অবদান প্রায় ৬.৫ শতাংশ। এত বিপুল সম্ভাবনার একটি খাত থেকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের অর্জন প্রায় শূণ্যের কোটায়। ১৬ কোটি ২০ লক্ষ গ্রাহকের মধ্যে টেলিটকের গ্রাহক সংখ্যা মাত্র ৪৮ লক্ষ।

বর্তমানে টেলিটক সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, সাংসদ ও মন্ত্রী পর্যায়েও টেলিটক ব্যবহার করার নজির পাওয়া যায় না। কিন্তু কেন এমন দশা এ প্রশ্ন খুঁজতেই আমরা টেলিটক সম্পর্কে গবেষণা করে কিছু তথ্য গণমাধ্যমকে জানাতে চাচ্ছি।

আমরা লক্ষ করেছি যে, টেলিটকের সেবার মূল্য অন্যান্য অপারেটরের তুলনায় কম। ২জি নেটওয়ার্ক সারাদেশব্যাপী রয়েছে তবে তা দুর্বল। ৩জি নেটওয়ার্ক সারাদেশ ব্যাপী নেই। ৪জি নেটওয়ার্ক রয়েছে শুধুমাত্র ঢাকায়। রিটেলার সংখ্যা খুবই নগন্য। মোবাইল ব্যাংকিংই রিচার্জ করার একমাত্র ভরসা।

আমরা এ বার টেলিটকের ব্যবস্থাপনার দিকে একটু নজর দেই। চেয়ারম্যান মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিটিসিএল থেকে আগত, তাছাড়া জিএম, ডিজিএম, এজিএম সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিটিসিএল বা ডাক বিভাগ থেকে বদলী হয়ে আসা।

প্রচলিত কথা আছে মন্ত্রণালয়ে তদবির করে লাভজনক বলে অনেকেই টেলিটকে বদলী হয়ে আসেন। এসব কর্তাব্যক্তিদের জবাবদিহিতা কোথায়? মন্ত্রণালয় বা তার মূল প্রতিষ্ঠানে। শাস্তি হলে কি হয়? পূর্বের কর্মস্থলে বদলী।

যখন জিপি ও রবির লাইসেন্স বাতিলের প্রশ্ন আসলো তখন মাননীয় টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বারবার বলেছেন আমরা টেলিটক দিয়ে বিকল্প সেবা তৈরি করবো। মন্ত্রীর ইচ্ছা ও চিন্তা ভাল। কিন্তু মূল ভাইরাস নির্মুল না করে দামী ঔষধ দিয়ে যেমন রোগ ভাল করা যায় না তেমনি টেলিটকেরও উন্নতি হয়।

এই প্রতিষ্ঠানটি অল্প সংখ্যক গ্রাহক নিয়েও লোকসানে নাই। তবে রাষ্ট্রীয় সুবিধার মূল্য ও বিনিয়োগের সুদ ধরলে এটি একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠান। যেখানে জিপি, রবি ও বাংলালিংকের বিনিয়োগ যথাক্রমে ৪০, ৩০ ও ২০ হাজার কোটি টাকা সেখানে টেলিটকের বিনিয়োগ মাত্র ৪ হাজার ৮ শত কোটি টাকা। টেলিটকের নিজস্ব কোন ভবন নাই।

তিনটি আলাদা ভাড়া ভবনে চলছে টেলিটকের কর্মকান্ড। এখানে জবাবদিহিতার কোন বালাই নাই। টেলিটকের এমডি নিজেই দুটি প্রকল্পের পরিচালক। গ্রাহকদের প্রতিনিধিদের সাথে উনারা কথা বলতে চান না। দুর্নীতি-অনিয়ম-স্বেচ্ছাচারিতা এখানে একাকার। টেলিটকের কাছে বিটিআরসির পাওনা রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৬ শত কোটি টাকা। যা কিনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ইকুইটির জন্য রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানে দক্ষ জনবলের অভাব নেই তবে সুশাসনের রয়েছে চরম অভাব।

টেলিটককে লাভজনক করতে হলে আপাত দৃষ্টিতে আমাদের যা মনে হয়েছে তা হলো-

* প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সচিব না হয়ে টার্গেটের ভিত্তিতে বিকল্প দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে নিয়োগ করা যেতে পারে।
* উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হবেন টেলিটকের নিজস্ব কর্মকর্তা বিটিসিএল বা ডাক বিভাগের নয়।
* প্রকল্প পরিচালক হবেন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যেকোন মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব।
* স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য একটি গ্রাহক ফোরাম থাকবে। যেখানে সুশীল সমাজ, সাংবাদিক, গ্রাহক প্রতিনিধি ও স্টেক হোল্ডারগণ থাকবেন।
* নিজস্ব জমিতে নিজস্ব ভবন গড়ে তুলতে হবে।
* বিটিএস গুলি সক্রিয় করে সারাদেশে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক পরিচালিত করতে হবে।
* সরকারি, আধাসরকারি, সামরিক ও স্বায়ত্বশাসিত সকল প্রতিষ্ঠানের সাথে টেলিটকের সমন্বিত যোগাযোগের মাধ্যমে টেলিটকের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।
* তরঙ্গের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি করে ইন্টারনেটের গতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে আনতে হবে।
* সময়োপযোগী করে গড়ে তুলতে আরো প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রয়োজন।
* অর্থ ছাড় করতে মন্ত্রণালয়ের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করে পরিচালনা পরিষদের মাধ্যমে দ্রুত মিটিং করে অর্থ ছাড়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

আমলাতন্ত্র, কম বিনিয়োগ ও জবাবদিহিতার অভাবে টেলিটক বিকশিত হচ্ছে না

প্রকাশিত সময় ০১:৩১:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ আমলাতন্ত্র, কম বিনিয়োগ ও জবাবদিহিতার অভাবে টেলিটক বিকশিত হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।

গতকাল ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকই চায় তার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ভালো চলুক। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির লাভের প্রতিযোগিতায় লাগাম টানতেই রাষ্ট্র তার নিজের প্রতিষ্ঠান তৈরি করে।

তাছাড়া আপদকালীন সময় মোকাবেলায় বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সরকার টেলিটকের যাত্রা শুরু করেছিল এ চিন্তা থেকেই। রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক চায় তার অর্থ রাষ্ট্রেই থেকে যাক।

বর্তমানে আমরা ৩.৮ বিলিয়ন ডলার কথা বলতে ব্যয় করছি। যার ৯০ ভাগই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, জিডিপি’তে টেলিযোগাযোগ খাতের অবদান প্রায় ৬.৫ শতাংশ। এত বিপুল সম্ভাবনার একটি খাত থেকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের অর্জন প্রায় শূণ্যের কোটায়। ১৬ কোটি ২০ লক্ষ গ্রাহকের মধ্যে টেলিটকের গ্রাহক সংখ্যা মাত্র ৪৮ লক্ষ।

বর্তমানে টেলিটক সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, সাংসদ ও মন্ত্রী পর্যায়েও টেলিটক ব্যবহার করার নজির পাওয়া যায় না। কিন্তু কেন এমন দশা এ প্রশ্ন খুঁজতেই আমরা টেলিটক সম্পর্কে গবেষণা করে কিছু তথ্য গণমাধ্যমকে জানাতে চাচ্ছি।

আমরা লক্ষ করেছি যে, টেলিটকের সেবার মূল্য অন্যান্য অপারেটরের তুলনায় কম। ২জি নেটওয়ার্ক সারাদেশব্যাপী রয়েছে তবে তা দুর্বল। ৩জি নেটওয়ার্ক সারাদেশ ব্যাপী নেই। ৪জি নেটওয়ার্ক রয়েছে শুধুমাত্র ঢাকায়। রিটেলার সংখ্যা খুবই নগন্য। মোবাইল ব্যাংকিংই রিচার্জ করার একমাত্র ভরসা।

আমরা এ বার টেলিটকের ব্যবস্থাপনার দিকে একটু নজর দেই। চেয়ারম্যান মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিটিসিএল থেকে আগত, তাছাড়া জিএম, ডিজিএম, এজিএম সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিটিসিএল বা ডাক বিভাগ থেকে বদলী হয়ে আসা।

প্রচলিত কথা আছে মন্ত্রণালয়ে তদবির করে লাভজনক বলে অনেকেই টেলিটকে বদলী হয়ে আসেন। এসব কর্তাব্যক্তিদের জবাবদিহিতা কোথায়? মন্ত্রণালয় বা তার মূল প্রতিষ্ঠানে। শাস্তি হলে কি হয়? পূর্বের কর্মস্থলে বদলী।

যখন জিপি ও রবির লাইসেন্স বাতিলের প্রশ্ন আসলো তখন মাননীয় টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বারবার বলেছেন আমরা টেলিটক দিয়ে বিকল্প সেবা তৈরি করবো। মন্ত্রীর ইচ্ছা ও চিন্তা ভাল। কিন্তু মূল ভাইরাস নির্মুল না করে দামী ঔষধ দিয়ে যেমন রোগ ভাল করা যায় না তেমনি টেলিটকেরও উন্নতি হয়।

এই প্রতিষ্ঠানটি অল্প সংখ্যক গ্রাহক নিয়েও লোকসানে নাই। তবে রাষ্ট্রীয় সুবিধার মূল্য ও বিনিয়োগের সুদ ধরলে এটি একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠান। যেখানে জিপি, রবি ও বাংলালিংকের বিনিয়োগ যথাক্রমে ৪০, ৩০ ও ২০ হাজার কোটি টাকা সেখানে টেলিটকের বিনিয়োগ মাত্র ৪ হাজার ৮ শত কোটি টাকা। টেলিটকের নিজস্ব কোন ভবন নাই।

তিনটি আলাদা ভাড়া ভবনে চলছে টেলিটকের কর্মকান্ড। এখানে জবাবদিহিতার কোন বালাই নাই। টেলিটকের এমডি নিজেই দুটি প্রকল্পের পরিচালক। গ্রাহকদের প্রতিনিধিদের সাথে উনারা কথা বলতে চান না। দুর্নীতি-অনিয়ম-স্বেচ্ছাচারিতা এখানে একাকার। টেলিটকের কাছে বিটিআরসির পাওনা রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৬ শত কোটি টাকা। যা কিনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ইকুইটির জন্য রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানে দক্ষ জনবলের অভাব নেই তবে সুশাসনের রয়েছে চরম অভাব।

টেলিটককে লাভজনক করতে হলে আপাত দৃষ্টিতে আমাদের যা মনে হয়েছে তা হলো-

* প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সচিব না হয়ে টার্গেটের ভিত্তিতে বিকল্প দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে নিয়োগ করা যেতে পারে।
* উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হবেন টেলিটকের নিজস্ব কর্মকর্তা বিটিসিএল বা ডাক বিভাগের নয়।
* প্রকল্প পরিচালক হবেন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যেকোন মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব।
* স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য একটি গ্রাহক ফোরাম থাকবে। যেখানে সুশীল সমাজ, সাংবাদিক, গ্রাহক প্রতিনিধি ও স্টেক হোল্ডারগণ থাকবেন।
* নিজস্ব জমিতে নিজস্ব ভবন গড়ে তুলতে হবে।
* বিটিএস গুলি সক্রিয় করে সারাদেশে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক পরিচালিত করতে হবে।
* সরকারি, আধাসরকারি, সামরিক ও স্বায়ত্বশাসিত সকল প্রতিষ্ঠানের সাথে টেলিটকের সমন্বিত যোগাযোগের মাধ্যমে টেলিটকের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।
* তরঙ্গের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি করে ইন্টারনেটের গতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে আনতে হবে।
* সময়োপযোগী করে গড়ে তুলতে আরো প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রয়োজন।
* অর্থ ছাড় করতে মন্ত্রণালয়ের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করে পরিচালনা পরিষদের মাধ্যমে দ্রুত মিটিং করে অর্থ ছাড়ের ব্যবস্থা করতে হবে।