ঢাকা ০৩:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

নিয়ম ভেঙে যৌনকর্মীর জানাজা অনুষ্ঠিত

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৩:০৬:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / 131

বাংলাদেশের যৌনকর্মীদের কাছে গত ৬ই ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

রাজবাড়ির দৌলতদিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের প্রাচীনতম যৌন-পল্লীতে প্রথমবারের মত কোনো যৌনকর্মীর মৃত্যুর পরে পুরোপুরি ইসলামি প্রথা মেনে জানাজা পড়িয়ে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

প্রয়াত যৌনকর্মী হামিদা বেগমের জানাজায় প্রায় দুশ মানুষ অংশগ্রহণ করে এবং চেহলামের দাওয়াতে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছিলেন প্রায় চারশোরও বেশি মানুষ।

যৌন ব্যবসা বাংলাদেশে বৈধ হওয়া সত্ত্বেও, সামাজিক প্রথা অনুসারে যৌনকর্মীরা সমাজের মানুষের কাছে কার্যত অচ্ছুত বলেই বিবেচিত। মৃত্যুর পরে তাই ধর্মীয় আচার-বিধি মেনে তাদের দাফন-কাফনের নজির একেবারেই নেই।

মৃত্যুর পরে তাদের জানাজা পড়াতে মৌলভিরা রাজীও হননা। সাধারণত মৃতদেহ গোপনে কবর দেয়া হয় অথবা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।

কিন্তু গত সপ্তাহে দৌলতদিয়া ঘাটে হামিদা বেগমের ক্ষেত্রে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি সত্যিকার অর্থেই ব্যতিক্রম এবং প্রথাবিরোধী।

পদ্মাপারের এই যৌন-পল্লীটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং প্রায় শত বছরের পুরনো । এখানকার বাসিন্দাদের মতে, কোনো যৌনকর্মীর জানাজা করে দাফন বা চেহলামের ঘটনা এর আগে আর কখনও ঘটেনি।

হামিদা বেগমের জানাজা পড়ানোর জন্য ইমাম সাহেবকে রাজী করাতে ভূমিকা রেখেছিলেন স্থানীয় পুলিশ প্রধান আশিকুর রহমান।

তাকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, “ইমাম সাহেব জানাজা পড়াতে রাজী না হওয়ায় আমি তাকে প্রশ্ন করেছিলাম, ইসলামে কি কোথাও নির্দেশ আছে যে যৌনকর্মীর জানাজা পড়ানো নিষেধ। আমার এই প্রশ্নের কোনো উত্তর ইমাম সাহেবের কাছে ছিলনা।” পরে ইমাম সাহেব জানাজা পড়াতে রাজী হন।

আশিকুর রহমান বলেন, “সেদিন এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল। জানাজায় অংশগ্রহন করার জন্য মানুষ অনেক রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন। যৌনকর্মীদের চোখে পানি টলটল করছিল।”

ঝুমুর বেগম নামে স্থানীয় যৌনকর্মীদের একজন নেত্রী হামিদা বেগমের জানাজা পড়ানোর দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন।

মৃত্যুর পর যৌনকর্মীদের করুণ পরিণতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা যদি কাউকে দাফন করতে যেতাম, গ্রামবাসীরা লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের তাড়া করতো।”

প্রয়াত হামিদা বেগমের মেয়ে লক্ষ্মী, যিনি নিজেও একজন যৌনকর্মী, এএফপিকে বলেন, “আমি স্বপ্নেও ভাবিনি যে এত সম্মানের সাথে আমার মায়ের শেষ বিদায় হবে।”
তিনি আরো বলেন, “আমার মাকে মানুষ হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে”।

সূত্রঃ বিবিসি

নিয়ম ভেঙে যৌনকর্মীর জানাজা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত সময় ০৩:০৬:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০

বাংলাদেশের যৌনকর্মীদের কাছে গত ৬ই ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

রাজবাড়ির দৌলতদিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের প্রাচীনতম যৌন-পল্লীতে প্রথমবারের মত কোনো যৌনকর্মীর মৃত্যুর পরে পুরোপুরি ইসলামি প্রথা মেনে জানাজা পড়িয়ে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

প্রয়াত যৌনকর্মী হামিদা বেগমের জানাজায় প্রায় দুশ মানুষ অংশগ্রহণ করে এবং চেহলামের দাওয়াতে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছিলেন প্রায় চারশোরও বেশি মানুষ।

যৌন ব্যবসা বাংলাদেশে বৈধ হওয়া সত্ত্বেও, সামাজিক প্রথা অনুসারে যৌনকর্মীরা সমাজের মানুষের কাছে কার্যত অচ্ছুত বলেই বিবেচিত। মৃত্যুর পরে তাই ধর্মীয় আচার-বিধি মেনে তাদের দাফন-কাফনের নজির একেবারেই নেই।

মৃত্যুর পরে তাদের জানাজা পড়াতে মৌলভিরা রাজীও হননা। সাধারণত মৃতদেহ গোপনে কবর দেয়া হয় অথবা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।

কিন্তু গত সপ্তাহে দৌলতদিয়া ঘাটে হামিদা বেগমের ক্ষেত্রে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি সত্যিকার অর্থেই ব্যতিক্রম এবং প্রথাবিরোধী।

পদ্মাপারের এই যৌন-পল্লীটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং প্রায় শত বছরের পুরনো । এখানকার বাসিন্দাদের মতে, কোনো যৌনকর্মীর জানাজা করে দাফন বা চেহলামের ঘটনা এর আগে আর কখনও ঘটেনি।

হামিদা বেগমের জানাজা পড়ানোর জন্য ইমাম সাহেবকে রাজী করাতে ভূমিকা রেখেছিলেন স্থানীয় পুলিশ প্রধান আশিকুর রহমান।

তাকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, “ইমাম সাহেব জানাজা পড়াতে রাজী না হওয়ায় আমি তাকে প্রশ্ন করেছিলাম, ইসলামে কি কোথাও নির্দেশ আছে যে যৌনকর্মীর জানাজা পড়ানো নিষেধ। আমার এই প্রশ্নের কোনো উত্তর ইমাম সাহেবের কাছে ছিলনা।” পরে ইমাম সাহেব জানাজা পড়াতে রাজী হন।

আশিকুর রহমান বলেন, “সেদিন এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল। জানাজায় অংশগ্রহন করার জন্য মানুষ অনেক রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন। যৌনকর্মীদের চোখে পানি টলটল করছিল।”

ঝুমুর বেগম নামে স্থানীয় যৌনকর্মীদের একজন নেত্রী হামিদা বেগমের জানাজা পড়ানোর দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন।

মৃত্যুর পর যৌনকর্মীদের করুণ পরিণতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা যদি কাউকে দাফন করতে যেতাম, গ্রামবাসীরা লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের তাড়া করতো।”

প্রয়াত হামিদা বেগমের মেয়ে লক্ষ্মী, যিনি নিজেও একজন যৌনকর্মী, এএফপিকে বলেন, “আমি স্বপ্নেও ভাবিনি যে এত সম্মানের সাথে আমার মায়ের শেষ বিদায় হবে।”
তিনি আরো বলেন, “আমার মাকে মানুষ হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে”।

সূত্রঃ বিবিসি